মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন

‘দেশের চিকিৎসাসেবা আন্তর্জাতিকমানের হতে হবে’

‘দেশের চিকিৎসাসেবা আন্তর্জাতিকমানের হতে হবে’

অনলাইন ডেক্স: চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের চিকিৎসাসেবা আন্তর্জাতিকমানের হতে হবে। আমরা চিকিৎসকদের জন্য আরও গবেষণা কেন্দ্র খুলব যাতে তারা গবেষণার প্রতি আরও জোর দিতে পারেন। আজ বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে প্রতিষ্ঠিত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ যেন স্বাস্থ্যসেবা পায় সে লক্ষ্য মাথায় রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে গরিব মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং ৩০ প্রকার ওষুধ পাচ্ছে।তিনি বলেন, দেশে যাতে আরও বেশি হাসপাতাল ও ক্লিনিক গড়ে ওঠে সে জন্য হাসপাতালের ও চিকিৎসার বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ওপর ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই চিকিৎসা ব্যবস্থাটা যেন একটা শিল্প হিসেবে গড়ে উঠে। দেশের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে যেন ঠিকমত মানসম্পন্ন পড়াশোনা হয় সে জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তদারকি করবে।শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের চিকিৎসায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে হবে। মানুষ সুষ্ঠু চিকিৎসাসেবা পাবে এটিই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে চিকিৎসকদের কাজ করে যেতে হবে। গবেষণার প্রতি জোর দিতে হবে। মানুষের যাতে রোগের পরিমাণ কমে সে ব্যাপারে কার্যকম উদ্যোগ নিতে হবে। স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকার সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছে। আমরা চিকিৎসাসেবা গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তা ছাড়া প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা দেয়া হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ডিজিটাল। সমগ্র বাংলাদেশে অনলাইন সুবিধা দেয়া হচ্ছে। মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, ফলে চিকিৎসা সেবা আরও বৃদ্ধি পাবে। মানুষ যেন অহেতুক ঢাকায় আসতে না হয়, বিশেষজ্ঞদের মতামত পায় সে জন্য আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জগণের চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা চালু থাকবে। সে সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রপাতিও এখানে সংগ্রহ করা হবে। মানুষ সেবা পাক এটিই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যবর্তী এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নেব। বাংলাদেশ তখন আর অবহেলা, অবজ্ঞার দেশ থাকবে না। সবাই বাংলাদেশকে সম্মান করবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে আমরা অনেক বরাদ্দ দিচ্ছি। দেশের মানুষ কম খরচে যেন সেবা পায় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে একটি ফান্ড করে দিয়েছিলাম। সে ফান্ড রাখা হয়েছিল দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য। আমি এ ফান্ডে আরও ১০ কোটি টাকা দিব যাতে দরিদ্ররা চিকিৎসার সুবিধা পায়।তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবার জন্য আমাদের প্রচুর নার্সের দরকার। আমরা নার্স নিয়োগে বয়স শিথিল করে দিয়েছি যাতে বেশি করে নিয়োগ দেয়া যায়। শুধু ডাক্তারদের ডরমেটরি নয়, নার্সদেরও ডরমেটরি করার পরিকল্পনা আগামী প্রকল্পে থাকবে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে আবারও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারলে প্রতিটি বিভাগে সরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়া হবে। এ সময় সিলেট মেডিক্যাল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার প্রস্তাব আজ (বৃহস্পতিবার) সংসদে উঠবে এবং পাস করা হবে বলেও জানান তিনি।বিএসএমএমইউর ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বক্তব্য রাখেন।এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের পেছনে নিজস্ব ৩ দশমিক ৮২ একর জমিতে দেশের প্রথম এ সেন্টার বেজড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ হচ্ছে। অত্যাধুনিক এ হাসপাতালে মোট ১১টি সেন্টার থাকবে। ২০২১ সালে ১৩ তলা বিশিষ্ট এ হাসপাতালের উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে এক ছাদের নিচেই সবধরনের স্বাস্থ্য সেবা মিলবে।সেন্টারগুলো হচ্ছে, কার্ডিও ও সেরিব্রো ভাসকুলার সেন্টার, স্পেশালাইজড অটিজম সেন্টারসহ ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি সেন্টার, কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজি, এক্সিডেন্টাল ইর্মাজেন্সি, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, অনকোলজি, রেসপিরেটরি মেডিসিন।এর আগে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় বিএসএমএমইউ -এর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পটির অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ার ইডিসিএফের অর্থায়নে এ বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com