অতিরিক্ত এজেন্ট কমিশনে নাকাল দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোনো সূচকেই সুখবর নেই। আয় কমছে। আর এই আয়ের তুলনায় ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। চলছে ধারদেনা করে। পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুতির আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের দিয়েছে নামকাওয়াস্তে মুনাফা। এ যেন ঋণ করে ঘি খাওয়া। কোম্পানিটির ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আর অবলিখন মুনাফা ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। মোট আয় ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এই আয়ের সাথে ব্যয়ের কোনো সামঞ্জস্য নেই। ব্যয় কয়েকগুণ বেড়েছে। মোট ব্যয় ২০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আর এজেন্সি কমিশন ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এই অতিরিক্ত ব্যয়েও ১ শতাংশ মুনাফা দিয়েছে কোম্পনিটি।
বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের স্থায়ী আমানত ক্রমেই কমছে। ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী আমানত ছিল ৩০ কোটি ৩১ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে এই আমানত ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে ২৯ কোটি ১৫ লাখ টাকায় নেমেছে। পরবর্তী বছরে আমানতের চিত্র আরও নিম্নগামী। কমেছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এই সময় আমানত ২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় নেমেছে। অথচ কোম্পানিটির পরিশোধিত মুলধন ৪০ কোটি টাকা। আমানত পরিশোধিত মুলধনের চেয়ে ১২ কোটি ২৫ লাখ কমে যাওয়ায় নিরাশ বিনিয়োগকারীরা।
কোম্পানিটিতে নেই কোনো ভালো খবর। ব্যাংকে অলস টাকা ২৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ টাকার একটি অংশ স্থায়ী আমানত করলে প্রতি মাসে মুনাফা পাওয়া যেতো অথচ ৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে নিয়মিত সুদ গুণছে। গেল বছর দেশ জেনারেলের আয়কর সঞ্চিতি ১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা অথচ আয়কর আগাম শোধ করেছে মাত্র ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। বাড়ছে অবন্টিত মুনাফা। ২০২২ সালে এই মুনাফার পরিমাণ ১২ লাখ। ২০২৩ সালে তা ১ লাখ বেড়ে হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। ২০২৪ সালে তা আরও ২ লাখ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ টাকা।
এসব অনিয়মের ব্যাপারে জানতে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদী খানেমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্নগুলো লিখিতভাবে পাঠাতে বলেন। লিখিত প্রশ্ন পাঠানোর পর যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।