ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর সভায় সংখ্যালঘু এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে-প্রতিবেশী জাহানারা গং এর বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) গৌরীপুর সাংবাদিক ঐক্য ফোরামের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নীলাঞ্জনা সরকার শান্তনা।
লিখিত অভিযোগে নীলাঞ্জনা জানায়, নিম্নতপছিল বর্ণিত ভূমির বি.আর.এস খতিয়ান নং-৯৬৫ এর রেকর্ডীয় মালিক আব্দুল হামিদ, পিতাঃ আব্দুল করিম। আব্দুল হামিদ তার জীবদ্দশায় বিগত ১৮-০৪-৮৪ ইং তারিখে ৫২২৯ নং হেবানামা দলিলমূলে নিম্নতপছিল বর্ণিত ভূমি তার স্ত্রী ও পুত্র কন্যা বরাবরে হস্তান্তর করতঃ দখলার্পন করে মৃত্যুবরণ করেন।
অতঃপর আব্দুল হামিদের স্ত্রী জাহানারা বেগম তার টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় সাবেক ১৩৬৬, হাল ২৮০৯ দাগের ০৭ শতাংশ ভূমি তৎ ভগ্নি আনোয়ারা বেগম বরাবরে হস্তান্তর করতঃ দখলার্পন করেন। অতঃপর আমার মাতা জোৎস্না রানী সরকার বিগত ০৭-০১-১৯৯৭ ইং তারিখে ২২১ নং সাফকাবলা দলিলমূলে আনোয়ারা বেগমের নিকট হতে সংশ্লিষ্ট দাগের ০৭ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে নিজ নামে ৩৮৭৩ নং পৃথক জমাখারিজ খতিয়ান খোলে পৌরসভার অনুমোদনক্রমে ভূমির পশ্চিম দিকে ৩ ফুট ওয়াল, পূর্ব দিকে ১ ফুট ওয়াল, উত্তর দিকে পুকুর ও আঃ হক (প্রাক্তন কমিশনার) এর পুকুর এই সীমানা চিহ্নিত করে লিন্টার পর্যন্ত ঘর উত্তোলণ করে ভোগ তছরূপ করে আসতে থাকাবস্থায় আমাকে একমাত্র কন্যা ও আমার পিতা নয়ন কুমার সরকারকে রেখে পরলোকগমন করেন। হিন্দু উত্তরাধিকারী আইনে স্ত্রীর সম্পত্তিতে স্বামীর কোন ওয়ারিশান না হওয়ায় তৎ একমাত্র কন্যা হিসেবে আমি উক্ত ভূমি প্রাপ্ত হয়ে নিজ নামে পৃথক জমাখারিজ করতঃ ডিসিআর প্রাপ্ত হয়ে হাল নাগাদ সরকারী খাজনাদি এবং পৌরকর পরিশোধ করে ভোগতছরূপ করে আসছি।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমার প্রতিবেশী বিবাদী (১) মোছাঃ জাহানারা বেগম, পতিমৃত-আব্দুল হামিদ (২) আব্দুল হান্নান জনি, পিতা মৃত-আব্দুল হামিদ ও (৩) আম্বিয়া খাতুন, পতি মৃত-আতিকুর রহমান, সর্ব সাং-আব্দুল হামিদ সড়ক, কালীপুর মধ্যমতরফ (কলাবাগান), গৌরীপুর, ময়মনসিংহগণ এলাকায় অত্যন্ত প্রতাপশালী হওয়ায় সম্পূর্ণ গায়ের জোরে আমাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষ পেয়ে আমার নিষ্কন্টক জমি গ্রাস করার অসৎ উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ নানা প্রকার অপকৌশল ও অপতৎপরতা চালিয়ে আসছেন।
আমি নিরীহ লোক এবং অর্থ লোকবলে দুর্বল থাকায় বিবাদীগণের কুমতলব বুঝতে পেরে আমি আমার নিষ্কন্টক জমিতে যাতে বিবাদীগণ অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বেদখল করতে না পারে সেজন্য গৌরীপুর সহকারী জজ আদালত, ঈশ্বরগঞ্জে ৯১/২০২১ সন অন্য প্রকার মোকদ্দমা দায়ের করলে তপছিল বর্ণিত ভূমিতে বিবাদী মোছাঃ জাহানারা বেগম গং যাতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজ্ঞ গৌরীপুর সহকারী জজ আদালত বিগত ২৭-০৯-২০২২ ইং তারিখে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন।
তিনি আরও জানান, আমার পিতা বর্তমানে হৃদরোগের সমস্যাসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত থাকায় তাঁর সুচিকিৎসার্থে এবং আমার পড়ালেখার খরচ মেটাতে টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় এবং টাকা সংগ্রহের অন্য কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে আমি তপছিল বর্ণিত ভূমি গৌরীপুরের ৯১ বন্ধু সমিতি বরাবরে বিক্রয় করে দেই।
পরবর্তীতে বিগত ২১-০৯-২০২৫ ইং তারিখ আমার পক্ষে আমার পিতাসহ ক্রয়কৃত জমির গ্রহীতা ১১ বন্ধু সমিতির সদস্যবৃন্দ আমিন নিয়ে জমি মাপার জন্য গেলে সকল বিবাদীগণ একযোগে এসে হৈ হুল্লোড় শুরু করেন এবং আমার পিতাকে মালাউনের বাচ্চা সহ ভারত পাঠিয়ে দেব ইত্যাদি নানান প্রকার অমার্জিত ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
অতঃপর তাদের বাধাঁর মুখে এবং ভয়ে ভয়ে ৯১ বন্ধু সমিতির সদস্যগণকে নিয়ে আমিন দ্বারা জমির পরিমাপ করে দ্রুত ফিরে আসি। পরবর্তীতে ০৪-১০-২০২৫ ইং তারিখে ৯১ বন্ধু সমিতির সদস্যবৃন্দকে নিয়ে তপছিল বর্ণিত ভূমিতে যাই এবং সেখানে ৯১ বন্ধু সমিতি এই জমির মালিক এ সংক্রান্ত একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে। পরে জানতে পারি যে, ঐ দিন রাতেই বিবাদী পক্ষের লোকজন উক্ত সাইনবোর্ড সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
এমতাবস্থায়, আমি আমার জমি হারানোর ভয়ে সর্বদা ভীত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। আমি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। আমার পিতা অসুস্থ থাকায় এবং বিবাদীগণের উশৃংখল আচরণের কারণে ও মানসিক চাপের ফলে দিনের পর দিন তারঁ শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হচ্ছে।