শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন
বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি মামলার জালে আটকে গেছে ঋণের নামে লুটপাট হওয়া ব্যাংকের বেশির ভাগ টাকা। ২৮৪টি মামলার বিপরীতে ব্যাংকের পাওনা আছে ৪ হাজার ৫,শ ৪৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। জাতীয় সংসদে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাংকটির বেশির ভাগ টাকাই বিতরণ করা হয়েছে জালিয়াতির মাধ্যমে। ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত এবং ডকুমেন্ট নেই ব্যাংকের হাতে তাই মামলায় এই টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভাবনা কম।
বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু দায়িত্ব নিয়েই লুটপাটে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ঋণের নামে টাকা দেয়া হয়। যার প্রায় সবগুলো এখন খেলাপি ঋণ। গ্রাহকের কাছে আটকে গেছে ৪ হাজার ৬’শ ৭৭ কোটি টাকা। টাকা আদায়ে মামলা হয়েছে ৩৯৯টি। এর মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ১১৫টি তার বিপরীতে আদায় ১’শ ২৯ কোটি টাকা। এখনো ২৮৪টি চলমান রয়েছে এর বিপরীতে ৪ হাজার ৫,শ ৪৭ কেটি ৯৭ লাখ টাকা।
মূল মামলাতেই আটকে আছে সবচেয়ে বেশি টাকা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই উদ্বেগ শুধু বেসিক ব্যাংকে কেন্দ্র করে না। এটা পুরো ব্যাংকিং খাতকে কেন্দ্র করে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো ব্যাংকিং খাতের ওপর আস্থা। ব্যাংকের ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারাচ্ছে।
বিআইবিএম মহাপরিচালক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ঋণ দেয়ার সময় ডকুমেন্ট ঠিক মতো করা হয়নি।
জালিয়াতিতে বেসিক ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত এবং ঋণের বিপরীতে নেয়া বেশির ভাগ জামানতই ভুয়া। তাই মামলা রায় পাওয়া গেলেও টাকা পাওয়া কঠিন বলে মনে করেন দুদক আইনজীবী।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম বলেন, যাবজ্জীবনের পরিবর্তে যদি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তাহলে এসব জালিয়াতি সঙ্গে যুক্তদের মধ্যে একটি ভয় কাজ করবে।
টাকা আদায়ে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন বেসিক ব্যাংক। বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল খান বলেন, বড় অঙ্কের খেলাপি ঋণ আদায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদারকি করা হচ্ছে।
ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহকের মধ্যে একের পর এক মামলা করছে বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের মাঝে ঋণ বিতরণ করা ঋণের টাকা ফেরত পাওয়া কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।