সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মিরপুর-৭ নম্বরে রূপনগর থানার পেছনে চলন্তিকা মোড়ে অবস্থিত বস্তিতে আকস্মিক লাগা আগুনে ৯৫ শতাংশ বস্তি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন বস্তির হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। এদের অধিকাংশই তাদের মালামাল আগুনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটের দিকে লাগা আগুন রাত সাড়ে ১০টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করলেও পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট সাড়ে তিন ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে,বস্তিতে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং ষড়যন্ত্রমূলক। এমন অভিযোগ জানিয়েছেন অগ্নিকাণ্ডে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানো বস্তিবাসীরা। তাদের অভিযোগ, কোনো দুর্ঘটনার কারণে নয়, বরং একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের ফল এ অগ্নিকাণ্ড।
বস্তির উত্তর ও দক্ষিণ- দুই দিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে দাবি করেছেন কয়েকজন বস্তিবাসী। তাদের অভিযোগ, বস্তি যেন পুরোপুরি আগুনে গ্রাস করে সেটি নিশ্চিত করতেই দুই দিক থেকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রায় ২২ বছর ধরে এই বস্তিতে বসবাসকারী এক বাসিন্দা জানায়, ঈদের সময়ে বেশিরভাগ মানুষ দেশে গেছে গা। বস্তি মস্তি খালি, যার যার ঘরে সন্ধ্যার সময় রইছে এমন সময় বস্তির মধ্যে আগুন লাগায়া দিছে। এই বস্তিতে আগুন লাগায়া বড় বিল্ডিং করতে পারে।
ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই ফায়ার সার্ভিসের কাজেও গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ করে বস্তির আরেক বাসিন্দা বলেন, আগুন লাগার অনেক পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা আসছে। একটা পাইপ দিয়ে একদিকে পানি ছিটিয়েছে। আমরা ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের পাও ধরছি যে, আমাদের আরেকটা পাইপ দেন। আরেকটা পাইপ দিয়ে আরেকদিকে যদি পানি দেওয়া হতো তাহলে কিন্তু আগুনটা ছড়ায় না। কিন্তু তারা ওই পাইপ ব্যবস্থা করতে পারেনি। আজ আমরা বলবো, ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণেই আমরা পুরা ধ্বংস।
এদিকে, এই ভয়াবহ আগুনের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অরুণ কান্তি শিকদার। তিনি বলেন, এ ঘটনার কারণ উদঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও রাতে বস্তিত আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ঘটনাস্থলে এসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, মিরপুর-৭ নম্বর বস্তিতে যারা বসবাস করতেন রাতে থাকার জন্য আশেপাশের যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। আগুনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে। যারা আগুনে আহত হয়েছে তাদের সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্নবাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান মেয়র।