শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার মতো কোনো রাজনৈতিক শক্তি দেশে নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। তাদের দলে যেমন ঐক্য নেই, তেমনি সংগঠন বলেও কিছু অবশিষ্ট নেই।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রংপুর বিভাগের দলীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের যে সাংগঠনিক শক্তি, সেটি আমরা এই নির্বাচনে দেখাতে সক্ষম হয়েছি। নির্বাচনে আমাদের সংগঠন ঐক্যবদ্ধ ছিল। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কারণে বিপুল ভোট পেয়ে দলের মেয়র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। এভাবে যে কোনো ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নামলে আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে আমি আরও মনে করি- সংগঠনের মধ্যে নেতাকর্মীদের নৈতিকতা সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। সব জায়গায় যে অবক্ষয়, সেই অবক্ষয়ের হাত থেকে রাজনীতিকে মুক্ত রাখতে হবে। সংগঠনের নেতাকর্মীদের যে নৈতিক মনোবল আছে, তা বাড়াতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংগঠনিক শক্তির পাশাপাশি শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনার অনন্য দক্ষতার কারণেই আমরা পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায়। জনগণের সমর্থন ছাড়া আমরা একদিনও রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে চাই না। জনগণ সমর্থন দিলে অবশ্যই আমরা আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসব। নেতাকর্মীরা বিনয়ী হলে জনগণ অব্যাহতভাবে আমাদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবে।
সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এমন অভিযোগ নাকচ করে ড. হাছান বলেন, নির্বাচনে কেন্দ্রের বাইরে নেতাকর্মীদের ভিড় থাকে। এবারও নির্দিষ্ট দূরত্বে আইন মেনে আমাদের দলের ক্যাম্প করা হয়েছিল। আমাদের মতো করে বিএনপিকে সেভাবে দেখা যায়নি। এটার কারণ হচ্ছে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা। আমাদের নেতাকর্মীদের কেন্দ্রের বাইরে দেখা গেছে- এর কারণ হচ্ছে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাকে রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন। সাংগঠনিক শক্তির কোনো বিকল্প নেই। তবে পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের কারও কারও মধ্যে আলস্য এসেছে। অনেক ক্ষেত্রে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু সুবিধাবাদীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তার আগে, জেলা-উপজেলা সম্মেলন হয়েছে। সেখানে একটি বার্তা দেয়া হয়েছিল সংগঠনকে সুবিধাবাদী ও অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে সেটি করা সম্ভব হয়েছে, পুরোপুরি হয়নি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে ড. হাছান বলেন, ১৯৬৩ সালে মালয়েশিয়ার স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত একই দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। এরপর সেই দলেরই একটি ভগ্নাশের নেতৃত্ব দিয়ে মাহাথির মোহাম্মদ আবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তিনি ইতিপূর্বে ২২ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার পর থেকে চার দশক যিনি ক্ষমতায় ছিলেন, এখন তার সন্তান সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট তিন দশক ক্ষমতায় ছিল। এগুলোর মূল কারণ সাংগঠনিক শক্তি।