সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হরিপুরে গ্রামবাংলার ঝোপঝাড় হতে বিলুপ্তির পথে কুচফল ওয়াজের মাঠ কাপানো আর নারীদের খাট কাপানো হুজুর মুফতি মুহাম্মদ শফিকুজ্জামান দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ৮০০ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: রিজভী নির্বাচন কবে, সেই ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই : প্রেস উইং মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী
ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৩৪ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৩৪ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ডেস্ক নিউজ: গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ৫০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত ও ১১৬৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এছাড়া রেলপথে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত, ১৩ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ৯টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত, ৫৬ জন আহত এবং ৬৪ জন নিখোঁজ হয়েছে বলে উঠে এসেছে পরিসংখ্যানে।

আজ সোমবার সকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ২১২ জন পথচারী, ১৩৪ জন চালক, ৭৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ২৬০ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৮৮ জন নারী, ৭৬ জন শিশু, একজন সাংবাদিক, একজন প্রকৌশলী, ২ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৬ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এর মধ্যে নিহত হয়েছে ৯৯ জন চালক, ১৮৭ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ৭১ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৪৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৪ জন শিশু, ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ২ জন মুক্তিযোদ্ধা, ১১ জন শিক্ষক, ১ জন প্রকৌশলী ছিল।

যেসব যানবাহন দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে সেগুলোর একটি পরিসংখ্যানও প্রকাশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এতে বলা হয়, মোট দুর্ঘটনার ১৫.৭৫ শতাংশ বাস, ২৭.৯৩ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৪.৩০ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৮.১৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ২০.৯৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১০.৫৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ১২.৩৩ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

এ মাসে মোট দুর্ঘটনার ৫৭.৫৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৮.০৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৬৭ শতাংশ খাদে পড়ে, ৫.৯৫ শতাংশ বিবিধ কারনে, ০.৫৯ শতাংশ চাকায় ওড়না পেচিয়ে এবং ১.৩৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ২.৪৫ শতাংশ আহতের হার বৃদ্ধি পেলেও সড়কে দুর্ঘটনার ৫.৩৫ শতাংশ ও নিহত ২.৪৩ শতাংশ কমেছে।

পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারী মাসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা ১.০৪ শতাংশ, পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ১.৬৩ শতাংশ এবং বেপরোয়া গতির কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ০.০২ শতাংশ কম সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে এই মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৫.০৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৬.১৯ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩.০২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.১৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.৩৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।

২০২০ সালের জানুয়ারী মাসের তুলনায় বিগত ফেব্রুয়ারী মাসে সড়ক-মহাসড়কের উন্নয়নের ফলে যানবাহনের গতি বাড়ার কারণে আঞ্চলিক মহাসড়কে ৩.৪৩ শতাংশ ও ফিডার রোডে ১.৭৪ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও জাতীয় মহাসড়কে ২.৮১ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।

এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৬ ফেব্রুয়ারী এইদিনে ২৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ৪০ জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ২৭ ফেব্রুয়ারী এইদিনে ০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ০৪ জন নিহত ০৫ জন আহত হয়।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ মালাও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। এগুলো হলো-
১. ডিজিটাল পদ্ধতিতে সি সি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা।
২. টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্র সমূহে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা।
৩. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাত বেদখল মুক্ত করা।
৪. দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা। জেব্রাক্রসিং অংকন করা।
৫. গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
৬. যাত্রী,পথচারী ও গণপরিবহনবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা জরুরী ভিত্তিতে প্রনয়ন।
৭. গাড়ীর ফিটনেস ও চালদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা।
৮. সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠনপূর্বক হতাহতদের চিকিৎসা ও পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
৯. দেশব্যাপী চাহিদানুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ নেয়া ।
১০. ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রেনিং একাডেমী গড়ে তোলা।
১১. গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের সকল মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতিমাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
১২. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো হলো- বেপরোয়া গতিতে গাড়িচালনা, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ছোট যানবাহন বৃদ্ধি।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com