বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা এবং দেশে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণায় সুযোগ সৃষ্টি করতে কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে সংসদে বিল পাস হয়েছে। বুধবার বিলটি পাসের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে অনার্স-মাস্টার্স পড়াবার অবকাঠামো ও যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নেই, সেখানে অনার্স-মাস্টার্স খুলে যত্রতত্র সনদ দেওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০২১’ সংসদে তুললে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর বিরোধী দলীয় সদস্যদের দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার। গত ২৮ জুন বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে বিলটি পরীক্ষা করে এক মাসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এদিকে বিলে বলা হয়ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন কৃষিবিদ বা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা অধ্যাপককে চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেবেন। কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি উপচার্য হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাদান এবং গবেষণা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। শিক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় টেকসই কৃষি-প্রযুক্তি ও উচ্চ ফলনশীল কৃষিজ দ্রব্যের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করবে বলে বিলে বলা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতিকল্পে এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ইনকিউবেটরের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে কৃষিখাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করার লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা অতীব প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।
বিল পাসের আগে জনমত যাচাই বাছাই এবং সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে যে কলেজগুলো রয়েছে সেখানে প্রায় ২৮ লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানসম্মত নয়। তাই যেখানে যেখানে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেকগুলো শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান আছে, অনেকগুলো খুবই ভালো প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলো ছাড়া বাকিগুলোতে সব জায়গায় আর অনার্স, মাস্টার্সের বিষয়টি থাকবে না। সেখানে বিএ, বিএসসি ,বি-কম সেগুলো থাকবে, সেগুলোর সাথে অসংখ্য শর্ট কোর্সেস ডিপ্লোমা সেগুলো করানো হবে। যেন তারা কর্মমুখী কাজে যুক্ত হতে পারেন।
শিক্ষা ও শিক্ষকের মান নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, আমাদের এখান থেকে পাস করে দেশে-বিদেশে সর্বক্ষেত্রে যে সাফল্য দেখি তাতে শিক্ষার মান একেবারে তলিয়ে গেছে একথা বলার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ একথা একেবারেই সঠিক নয়। শ্রেণি কক্ষ বন্ধ ছিল, কিন্তু অনলাইনে পাঠদান পুরোপুরি চলেছে। ফলে খুব একটা সেশন জটের সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই আন্দোলন হবে, এই ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলছি না, এই কথাটির মতো হাস্যকর কথা আর কিছুই হতে পারে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।