রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানে দাড়ি শেভ বা ছাটাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কট্টর ইসলামিক সংগঠন তালেবান। দেশটির হেলমান্দ প্রদেশের নাপিতদের ওপর বিষয়টি নিয়ে একটি নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে গোষ্ঠীটি। এছাড়া রাজধানী কাবুলের নাপিতদেরও একই নির্দেশনা আরোপ করা হয়। ফলে আফগান নাপিতরা এখন থেকে আর কারও দাড়ি শেভ বা কেটে দিতে পারবেন না।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তালেবান নেতাদের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, দাড়ি ছাটাই বা শেভ করা পুরোপুরি ইসলাম পরিপন্থি।
এ দিকে তালেবানের পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, সরকারের এই আইন কেউ অমান্য করলে অবশ্যই তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাড়ি কাটা বিষয়ক এই আদেশ পাওয়ার কথা কাবুলের কিছু সংখ্যক নাপিতও ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, তালেবান বাহিনীর এই নির্দেশনার কারণে গোষ্ঠীটি তাদের আগের মেয়াদের কট্টরপন্থি শাসনের শঙ্কা ফিরছে জনমানুষের মনে। যদিও গেল আগস্ট মাসে কাবুল দখলের পর থেকে অতীতের তুলনায় উদারভাবে দেশ পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাহিনীটি।
বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের সেলুনগুলোতে এরই মধ্যে একটি করে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছেন তালেবান যোদ্ধারা। সেখানে চুল ও দাড়ি কাটার ক্ষেত্রে নাপিতদেরকে শরীয়া আইন অনুসরণের জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেলুনগুলোতে টাঙানো এসব নোটিশ বিবিসি নিউজের প্রতিবেদকরা দেখেছেন এবং পড়েছেন। সেখানে লেখা ছিল, (তাদের এই আদেশের বিরুদ্ধে) অভিযোগ করার অধিকার কারও নেই।
রাজধানী কাবুলের একজন নরসুন্দর বিবিসি নিউজকে বলেন, তালেবান যোদ্ধারা আমার এখানে প্রায়ই আসছেন এবং দাড়ি কাটা বন্ধে একের পর এক আদেশ দিচ্ছেন। এমনকি যারা নির্দেশনা অমান্য করবেন তাদেরকে ধরতে সাদা পোশাকে ইন্সপেক্টরও পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যোদ্ধারা।
এ দিকে কাবুলের সবচেয়ে বড় সেলুনগুলোর মধ্যে একটির একজন নাপিত বলেন, তালেবান সরকারের কর্মকর্তার পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির কাছ থেকে আমি টেলিফোন পেয়েছি। তখন তিনি আমাকে আমেরিকান স্টাইল বন্ধ করতে এবং কারও দাড়ি শেভ বা ছাটাই করতে বারণ করেছেন।
অপর দিকে তালেবান বাহিনীর এই নির্দেশনার পাওয়ার পর নিজেদের জীবন ও উপার্জন নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে পড়েছেন আফগান নরসুন্দররা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের মধ্যে অনেক নাপিতই এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।