রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর নিকটবর্তী নারায়অনগঞ্জের রূপগঞ্জে শীর্ষ সন্ত্রাসী হারিজুলের অত্যাচার-নির্যাতনে অসহায় হয়ে পরেছে এলাকাবাসী। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতন হলেও এখনও যুবলীগ নেতা হারিজুলের অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ হয়নি। যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা আর ক্ষোভ।
অনুসন্ধানে জানাযায়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের দুই দিন আগে হারিজুল ওরফে খোট্টায় হারিজুলের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় এখনো কারাভোগ করছে রূপগঞ্জের দাঊদপুরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আব্দুস সাত্তার ওরফে এস টি সাত্তার।
শেখ হাসিনা সরকার পরিবর্তন হলেও বহাল তবিয়তে আছেন নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হারিজুল ইসলাম। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ও দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর মাস্টারের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর প্রধান বলে পরিচিত। রয়েছে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক, অস্ত্র ও মাদক সহ একাধিক মামলা।
রূপগঞ্জে দাউদপুরে শীতলক্ষা নদীর পাশে সরকারি হালটে বেকু দিয়ে মাটি কাটার মহা উৎসব, মাটি খেকো সেন্টিকেটের প্রদান হুতা মামলার আসামি ফারিজুল ওরফে খোট্টায় হারিজুল। তার কিশোর গ্যাং দিয়ে সকল অপরাধ পরিচালনা করে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ডের খৈইসাইর গ্রামের শীতলক্ষা নদীর পাশে দীর্ঘদিন মাটি কাটায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হারিজুর ওরফে খোট্টাই হারিজুল ও তার বাহিনী।
ডজন খানিক মামলার আসামি সন্ত্রাসী হারিজুলের হামলায় গুরুতর আহত একাধীক ভুক্তভোগী প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিচার না পেয়ে হতাশা আর প্রাণ ভয়ে জীবন যাপন করছে। হারিজুল বাহিনীর হামলায় কিছুদিন আগেই চোখ হারিয়েছে অনার্স পড়ুয়া ছাত্র ফয়সাল।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাসিনা সরকারের আমলে দলের ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের আশীর্বাদ পুষ্ট ও বিশ্বস্ত হাতিয়ার হওয়ায় হারিজুল অল্পসময়ে হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। সেই সুবাদে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নে অনৈতিক ভাবে দীর্ঘদিন প্রভাব বিস্তার করে গড়ে তুলেন সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। নাম হয়েছে হারিজুল বাহিনী। আর এ বাহিনীর মাধ্যমে মাদক সহ কায়েম করে ত্রাশের রাজত্ব। জমি দখল, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি বিক্রি ও নদী থেকে বালু ভরাটের নামে অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত এ যুবলীগ নেতা। বিভিন্ন থানায় রয়েছে তার নামে একাধিক অভিযোগ এবং মামলা।
এলাকাবাসী জানায়, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর মাস্টারের ক্যাডার ও যুবলীগ নেতা পরিচয়ে এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়িয়েছে। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে আমরা এলাকায় ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারি না। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললেই সংঘবদ্ধ হয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে হামলা চালাতো। আমরা তার অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলাম। প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেয়া হোক।
ভুক্তভোগী এক সদস্য প্রতিনিধিকে বলেন, আমার বাড়ির জায়গার বালু ভরাটের কথা বলে হারিজুল টাকা নিয়ে সে টাকা আত্মসাৎ করেছে। টাকা চাইলে হুমকি দেয়। পরে উপায় না পেয়ে জায়গাটি আমি অন্য লোক দিয়ে মাটি ভরাট করতে গেলেও সেখানে হারিজুল তার বাহিনী বাধা দেয় এবং চাঁদা দাবী করে। এক পর্যায় এ নিয়ে কথা কাটি হলে আমাদের পরিবারের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, মাদক বিক্রির মাধ্যমে অল্পসময়ে বহু অর্থ সম্পদের মালিক বনে যান হারিজুল। তার এই অবৈধ অর্থ দিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন। একে একে প্রতিষ্ঠা করেন ইট ভাটা সহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তার বিরুদ্ধে রয়েছে রূপগঞ্জ ও কালিগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা। এসব মামলাগুলো হয়েছে গত হাসিনা সরকারের আমলে। আর এসব মামলা মাথায় নিয়েই তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বেরিয়েছেন।
অন্যদিকে একাধীক ফেসবুক আইডিতে ব্যাবসায়ি সাত্তার ও তার স্ত্রী পরিবার নিয়ে মিথ্যা বিভ্রান্তমূলক অশ্লীল পোস্ট ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানহানী করে যাচ্ছে এই হারিজুল বাহিনী।
সূত্রে জানা যায় যে দাউদপুর ইউনিয়নের রাবেয়া আক্তার দিপুর বিরুদ্ধে এই হারিজুল এবং কথিত সাংবাদিক পরিচয় দানকারী নাজমুল হাসান এর ফেসবুক আইডি থেকে রাবেয়া আক্তার দিপুর এডিট করা অশ্লীল ছবি অশ্লীল কথাবার্তা ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করিয়া আসিতেছে। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা এবং র্যরাব -১ রুপগঞ্জ এ সন্ত্রাসী হারিজুল ও কথিত সাংবাদিক নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন রাবেয়া আক্তার দিপু। সন্ত্রাসী হারিজুল বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান এলাকাবাসী।