রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন

আবহাওয়া পরিবর্তনে সুস্থ থাকতে করণীয়

ডেস্ক রিপোর্ট:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৬

আমাদের চারপাশে হঠাৎ করেই সর্দি, ফ্লু এবং জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ অসুস্থ, আবার কেউ কেউ ফ্লু থেকে সেরে উঠছেন।

খেয়াল করে দেখবেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়, বিশেষ করে শীত শুরু হওয়ার আগে আমরা প্রতিবার অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকি। এখন নিশ্চয়ই মনে প্রশ্ন জেগেছে, কেন আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ে?

আবহাওয়ার পরিবর্তন কীভাবে স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে
আবহাওয়া আমাদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং বায়ুচাপের হঠাৎ পরিবর্তন শরীরকে চাপে ফেলতে পারে, যা অসুস্থতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দিতে পারে এবং হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

অন্যদিকে গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া পানিশূন্যতা ও ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মেঘলা বা বৃষ্টির দিন মেজাজ এবং শক্তির স্তরকে প্রভাবিত করতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় বায়ু দূষণ এবং পরাগরেণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়; বিশেষ করে শীতকালে ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস নিম্ন বায়ুমণ্ডলে স্থির হয়ে যায়, যা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা এবং অ্যালার্জি বাড়িয়ে দিতে পারে।

আবহাওয়া পরিবর্তন কেন সাইনাসকে প্রভাবিত করে
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় আমাদের বেশিরভাগই সাইনাসের সমস্যায় ভুগতে থাকে। এটি কেন ঘটে তা বোঝার আগে সাইনাস কী, তা বুঝতে হবে। সাইনাস মুখের হাড় এবং খুলির মধ্যে গর্ত দিয়ে তৈরি। এই গর্তগুলো নাকের পথের সঙ্গে যুক্ত শ্লেষ্মা ঝিল্লি দ্বারা আবৃত থাকে। সাইনাস শ্লেষ্মা তৈরির জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।

যখন আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়, বিশেষ করে তাপমাত্রা বা আর্দ্রতার হ্রাস হয়, তখন সাইনাস মেমব্রেন জ্বালা বা স্ফীত হতে পারে। ঠান্ডা বাতাসের কারণে নাকের পথ শুকিয়ে যায়, অন্যদিকে আর্দ্র বা বৃষ্টির কারণে নাকের শ্লেষ্মা বাড়তে পারে। বায়ুচাপের পরিবর্তন সাইনাসের চাপকে প্রভাবিত করে, যার ফলে মাথাব্যথা বা মুখের ব্যথা হতে পারে। অ্যালার্জি বা সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এই পরিবর্তনের সময় বেশি ভুগে থাকেন।

আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে
* কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে ঠান্ডা এবং ফ্লু।
* পরাগ বা ধুলোর পরিবর্তনের কারণে মৌসুমী অ্যালার্জি।
* তাপমাত্রার পরিবর্তন বা দূষিত বাতাস থেকে হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা।
* জয়েন্টে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস ব্যারোমেট্রিক চাপের পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত।।
* ঠান্ডা আবহাওয়ায় শুষ্কতা বা একজিমার মতো ত্বকের সমস্যার কারণ হতে পারে, আর্দ্র অবস্থায় হতে পারে ছত্রাকের সংক্রমণ।

আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত অসুস্থতা প্রতিরোধের টিপস
যথাযথ পোশাক পরুন: তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে সহজেই খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য সঠিক পোশাক পরুন।
হাইড্রেটেড থাকুন: ঠান্ডা আবহাওয়ায়ও শরীরের কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করুন।
স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন: মৌসুমী ভাইরাসের বিস্তার কমাতে ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।

আকস্মিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন: আপনার শরীরকে সামঞ্জস্য করতে সাহায্য করার জন্য গরম এবং ঠান্ডা পরিবেশের ধীরে ধীরে প্রবেশ করুন।
সুষম খাদ্য খান: ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল এবং শাক-সবজি নিয়মিত খেতে হবে।
পরিবর্তিত আবহাওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যা করবেন

পর্যাপ্ত ঘুম: বিশ্রাম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। তাই পর্যাপ্ত ঘুমের দিকে নজর রাখুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন: পরিমিত ব্যায়াম রক্ত ​​সঞ্চালন এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে সামগ্রিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার: সাইট্রাস ফল, আদা, হলুদ, রসুন এবং দই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ডি গ্রহণ করুন: পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পেতে নিয়মিত রোদে বসার অভ্যাস করুন।
মানসিক চাপ কমান: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করতে ধর্মীয় প্রার্থনা, ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস অনুশীলন করুন।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com