শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।এছাড়া আরো তিনজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।আক্রান্তদের বয়স বিশ থেকে পয়ত্রিশ বছরের মধ্যে বলে জানা গেছে। আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির পরিচালক ফ্লোরা বলেন, ‘তাদের সবার অবস্থাই স্থিতিশীল। তিনজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, আক্রান্তদের মধ্যে দুজন পুরুষ, একজন নারী; তিনজনই বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে দুজন ইতালির দুটি শহর থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে আসায় পরিবারের আরেক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।ওই তিনজনের সংক্রমণের বিষয়ে শনিবার নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘দুজন দেশে আসার পর তাদের উপসর্গ দেখা দেয়। আমাদের হটলাইনে ফোন দিলে আমরা তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠাই। সেখানে দুজনের পজেটিভ আসে। তাদের কন্টাক্টে থাকা চারজনকে পরীক্ষা করেছি। একজন পজেটিভ। বাকিরা নেগেটিভ এসেছে।’তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এজন্য সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে সারাদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এমন কিছু বলা যাবে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। জনসমাগমের মধ্যে না যেতে পরামর্শ দেবো, বাসাতে থাকাই ভালো। তাদের (রোগীদের) শনাক্ত করা যায় এমন প্রশ্ন না করার আহ্বান জানান তিনি।করণীয় বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ও কাশি শিষ্টাচার মেনে চলার বিকল্প নেই। এজন্য গণমাধ্যমসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।আইইডিসিআর-এর এই পরিচালক বলেন, আমরা সব সময় বলেছি, প্রস্তুতির কোনও শেষ নেই। আমরা আইসোলেশন ইউনিট করেছিলাম। এখন আইসোলেটেড হসপিটাল আইডেন্টিফাই করছি। এই আইসোলেটেড হসপিটালগুলো ঢাকার বাইরেও আইডেন্টিফাই করা হচ্ছে।
এর পরের পদক্ষেপ হিসেবে যদি রোগী আরও বৃদ্ধি পায়, আমরা আশঙ্কা করছি না এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে, কিন্তু যদি রোগী আরও বৃদ্ধি পায়, স্কুল কলেজ বা কমিউনিটি সেন্টারে যদি হাসপাতাল করার প্রয়োজন হয় সেই পরিকল্পনা আমাদের নেওয়া আছে।এই রোগে আতঙ্কিত হয়ে সবাইকে মাস্ক না পরার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে মাস্ক পরে ঘুরতে হবে এমন না। আক্রান্ত রোগী ও রোগীকে যিনি সেবা দেবেন তারা মাস্ক পরবেন। তবে আবারও তিনি সম্ভব হলে জনসমাগমপূর্ণ এলাকা, গণপরিবহন ইত্যাদি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ জনে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৬০ হাজার ১৯০ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিশ্বব্যাপী ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬৯৬ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯৭ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ১৩৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৮৩ এবং মৃত্যু হয়েছে ২৩৩ জনের। অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৮২৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৪৫ জন।