সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
মিশু সিকদার- বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে তরমুজ চাষীদের অস্থায়ী ডেরা বাসায়(টং ঘর) দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
গেল মঙ্গলবার(২১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়ন থেকে আসা নুর হোসেন(৩২) প্রোজেক্ট মালিক এর ডেরা বাসায় এই ডাকাতি করেন দুর্বৃত্তরা।
ডাকাতির সময় ডেরা বাসার মোতালেব (৪৬), বেল্লাল (৪০), জোটন (৩২),বাচ্চু (২৫) ও সেলিম (৩৫) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত পা বেধে। বাসা থেকে ৪৮ বস্তা সার, ৩০ কেজি ওজনের দুইটি এলপি গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার, তিনটি ছোট ১২ কেজি ওজনের এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার, একটি চুলা, ৬ বস্তা চাউল, এক ব্রেল ডিজেল, দুইটি পানির পাম্প, একটি ৫০ওয়াডের সোলার প্যানেল, ও ৬০ওয়াড ব্যাটার, দুইটি হাত গড়ি, একটি টর্চ লাইট, ১৬টি ধান কাটার কাস্তে, দুটি স্মার্ট ফোন, তিনটি বাটন ফোন, ১০ লিটার সয়াবিন তৈল ও নগদ ২১৭০ টাকা সহ প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর ।
তরমুজ চাষি মোতালেব ও বাচ্চু বলেন, ১০-১২ জনের ডাকাত দল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে ট্রলার নিয়ে, আমাদের বাসায় এসেই অমানবিকভাবে নির্যাতন করে। এরপর আমাদের মোবাইল ফোন ও টাকাসহ সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।
চাষিরা বলেন আমরা ডাকাতদের চিনতে পারিনি ঘটনার পর দিন বেলা ১২টার দিকে স্থানীয় সিদ্দিক খান আমাদেরকে ফোনে বলেন চরমিয়াজান, বউ বাজারে এলাকায় একটি সার ভর্তি ট্রলার পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে দেখি সারের বস্তা গুলোতে কাদা মাটি মাখানো এবং পানির পাম্পের তলা পরে আছে। সেগুলো দেখে আমরা চিনতে পেরেছি। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ভিতিসন্ত্রস্ত পরিবেশ বিরাজ করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বসার মৃধা মাস্টার মাইন্ড ও নিজাম ফকিরের নেতৃত্বে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা হলেন, ইউপি সদস্য বসার মৃধা (৫০),ট্রলার মালিক আল-আমীন (২৫),নিজাম ফকির (৪০),হাবি হাওলাদার (৫৫),বাবুল সরদার (৪৭), দেলোয়ার গাজী (৪২), লিটন সরদার (৪০), বাবুল (২৮) ও রিয়াজ (২৭)।
এ বিষয়ে ডাকাতি চক্রের সরদার নিজাম ফকির সত্যতা শিকার করে বলেন ডাকাতির আংশিক মালামাল চারদিন পর পেরত দেয়া হয়েছে। ডাকাতির মূল হোতা বসার মৃধা মুঠোফোনে ডাকাতির বিষয়টি অস্বীকার করেন ও দেখা করবেন বলে, মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন। ডাকাত দলের অন্য সদস্য ট্রলার মালিক আল- আমিন স্থানীয় সালিস বৈঠকে চেয়ারম্যান এনামুল এর চাপ,প্রয়োগ করলে, বলেন। ডাকাতের সরদার নিজাম ফকির ও দেলোয়ার আমার ট্রলার সহ আমাকে ঘুম করার হুমকি দিলে আমি স্থানীয় বসার মেম্বার কে জানাই পরে তিনি আমাকে তাদের সাথে যেতে বাধ্য করায় বলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী (৩৫) বলেন, এই ডাকাত দল ভোলা ও বাউফলের আতঙ্ক, এরা মহাসিন গ্রুপের লোক। এলাকায় এদের ভয়ে কেউ মুখ খোলে না এরা দ্বীপের ত্রাস। ডাকাতি হওয়া সকল মালামাল সহ ডাকাতদের শনাক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সালিশ বৈঠকে তারা তা স্বীকারও করেছেন। তবে বসার মৃধা স্থানীয় ইয়াকুব আলী ও বসার বয়াতি কে তার বাসায় নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বলে ওই সময়ে বসার মৃধার ও ইয়াকুব আলী এর কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপে বসার মৃধাকে বলতে শোনা যায়, তোরা আমার আপনজন তোরা এ-ই বিষয় টা জানাজানি করিস না তাহলে আমার মান সম্মান থাকে না এর চেয়ে আমার গলা কেটে চলে যা।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার অফসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।