বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মণিপুর আবারো গোলাগুলি, স্থানীয় ভাবে তৈরি অস্ত্র উদ্ধার ব্যবসায়ীদের নামে হত্যা মামলা দিয়ে চলছে শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্র নওগাঁয় অবৈধ বিস্ফোরক দ্রব্যসহ রোপম কুমার বর্মন কে আটক গাজীপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা মাঝ আকাশে বিমানের ভেতরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বাংলাদেশি কুড়িগ্রাম উলিপুরে নিয়োগ বাণিজ্যের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে প্রিন্সিপাল অবরুদ্ধ, দফায় দফায় বৈঠক ও বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় লেখক উৎসবে সন্মাননা পেলেন কবি ও সাংবাদিক মোল্লা মোঃ রানা কসবায় ঈদে মিলাদুন্নবী ও সিরাতুুন্নবী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন আহত দেশ ছাড়ার গুঞ্জন, যা বললেন আসিফ নজরুল ২০১৪ সালে আখাউড়ায় ভোটকেন্দ্রে হত্যার ঘটনায় সাবেক আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
মেট্রোরেলে থাকবে কেপিআই নিরাপত্তা: উপদেষ্টা ফাওজুল

মেট্রোরেলে থাকবে কেপিআই নিরাপত্তা: উপদেষ্টা ফাওজুল

মেট্রোরেলে সহিংসতা ঠেকাতে কেপিআই নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেছেন, “এটা (মেট্রোরেল) যাতে ভাংচুর না হয়, সেজন্য এটাকে কেপিআই হিসাবে একটা আপগ্রেড করার চেষ্টা করতেছি; যাতে এটার নিরাপত্তা বাড়ে। এবং এটাকে একটি এসেনসিয়াল সার্ভিস হিসাবে ডিক্লার করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, যাতে করে কেউ এভাবে সার্ভিসটাকে ব্যাহত করতে না পারে।”

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতায় বন্ধ হয়ে যাওয়া মেট্রোরেল ৩৭ দিন পর রোববার চালু হয়েছে। এদিন সকালে উপদেষ্টা ফাওজুল মেট্রোরেলে চেপে আগারগাঁও থেকে সচিবালয় স্টেশনে আসার পর ওই মন্তব্য করেন।

সাধারণত জাতীয় অর্থনীতি কিংবা প্রতিরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কী পয়েন্ট ইনস্টলেশন বা কেপিআই নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়। মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহনে সেই নিরাপত্তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা খোলাসা করেননি সড়ক উপদেষ্টা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরে মেট্রোরেল স্টেশনে তাণ্ডব চালানো হয়। ফাইল ছবি।

আর মেট্রোরেলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা’ হিসেবে ঘোষণা করা হলে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে। কোনো ব্যক্তি বেআইনি ধর্মঘট করলে ‘অত্যাবশক পরিষেবা আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮ জুলাই বিকালে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল। পরদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা চালানো হয় পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনে। এরপর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মেট্রোরের স্টেশনে যারা সহিংসতা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফাওজুল কবির খান বলেন, “এখানে যে সমস্যা হয়ে গেছে- যেহেতু এটা গণআন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল, এখন প্রাথমিকভাবে সব মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনারা সবাই জানেন, যারা দেশকে পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেছে- তাদের পক্ষে এ ধরনের কাজ তো করা সম্ভব না।

“এটা দুষ্কৃতিকারীদের কাজ। আপনাদের কাছে তাদের ভিডিও আছে, ফুটেজ আছে; আমরা এর জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।”

সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ নম্বর ও কাজীপাড়া স্টেশন আপাতত বন্ধ থাকছে। এসব স্টেশন কবে নাগাদ চালু হতে পারে তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানান উপদেষ্টা ফাওজুল।

তিনি বলেন, “আমরা গত ৩-৪ দিন আগে- মেট্রোরেলের জাপানিজ যারা বাস্তবায়ন করছেন, আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করেছি। অন্যান্য লাইনগুলো চালুর ব্যপারে আমরা কাজ করছি। আজকে বিকালে জাপানের রাষ্টদূত আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবেন।

“কাজীপাড়া এবং মিরপুর ১০, এটা কীভাবে চালু করা যায়- দ্রুততম সময়ের মধ্যে, সে ব্যাপারে আলাপ হবে। মেট্রোরেলের যে এমডি, উনাকে বলেছি, ‘ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে, এটা অ্যাসেস করেন, আমাদের একটা সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন দেন- কখন এটা চালু হবে।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ‘বৈষম্যহীন’ বেতন কাঠামোসহ ছয় দাবিতে ৮ অগাস্ট থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন মেট্রোরেলের ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা।

গত ১১ অগাস্ট মেট্রোরেল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মেট্রোরেল পুরোদমে চালুর আগে পরিস্থিতি যাচাই-বাছাইয়ে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর প্রস্তুতি চলছে। আর পরীক্ষামূলক চলাচল শেষে ১৭ অগাস্ট থেকে তা চালু করতে কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তবে আন্দোলনে থাকা কর্মীরাই কাজে ফেরেন ২০ অগাস্ট। ফলে কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মেট্রোরেল চালু হতে বিলম্ব হয়।

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “আপনারা জানেন যে- এটা একটা জনপ্রত্যাশার সরকার। আমি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরেই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘তোমার প্রথম কাজ হবে মেট্রোরেল চালু করা’। সেটাই আমরা করেছি। এখানে বোর্ড পুনর্গঠন করতে হয়েছে। বোর্ডের সভা ছিল, কিছু দাবি-দাওয়া ছিল, এগুলো আমরা দেখেছি।

“এর আগে ১৭ তারিখ এটা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেট্রোরেলের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য সেটা চালু করা সম্ভব হয়নি। আপনারা জানেন এটা বড় অন্যায় কাজ করেছে। তিন লাখ যাত্রীকে জিম্মি করে কোনো দাবি আদায়ের চেষ্টা, এটা কোনো শুভ লক্ষণ না।”

দেশে দাবি-দাওয়ার মৌসুম চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সবাই চায় বৈষম্য দূর হবে, সবাই চায় বঞ্চনা থেকে তারা মুক্তি পাবেন। ১৬ বছরের বঞ্চনা…তো সরকারের ১৬ দিন হয়েছে, অন্তত ১৬ মাস সময় দেন। আমরা আস্তে আস্তে এগুলো সবই বিবেচনা করব।”

সব দাবি একসঙ্গে পূরণ করতে গেলে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন সড়ক উপদেষ্টা।

“একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে- এসব দাবি-দাওয়ার সাথে একটা আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে। আপনার সরকারের যদি রাজস্ব না বাড়ে, কিংবা অন্যান্য আয় যদি না বাড়ে- তাহলে এটা কোথা থেকে দিবে? এখন যদি টাকা ছেপে আমরা দিতে পারি, তাইলে তো মুদ্রাস্ফীতি হবে। তাইলে তো সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হবে। সুতরাং এটা (মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতি) অনিভিপ্রেত ঘটনা ছিল এবং আমরা চাই ভবিষ্যতে এটা ঘটবে না।”

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com