রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: ১৬ বছরের এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে দায়ী প্রমাণিত হয়েছে ভারতের বিতর্কিত ‘ধর্মীয় গুরু’ ৭৭ বছর বয়সী আসারাম বাপু।
এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কায় তার বিরুদ্ধে ঘোষিত দণ্ড এখনো সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। তবে আইন অনুযায়ী তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন থেকে ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা ও গুজরাটে আগাম নিরাপত্তা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ৪০০ আশ্রমের মাধ্যমে ধ্যান ও যোগ সাধনা শেখাত আসারাম। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ ভক্ত রয়েছে তার।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৩ সালে গ্রেফতার হয় আসারাম। পরে আরেক নারী ভক্তও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। সেই থেকে ধর্ষণ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কারাগারে রয়েছে সে। ছেলে নারায়ণ সাইও ধর্ষণের অভিযোগে কারাভোগ করছে। কারাগারে থাকতে ১২ বার জামিনের আবেদন করেছে আসারাম। প্রতিবারই তার আবেদন প্রত্যাখান করেছে আদালত।
স্থানীয় পত্রিকার খবর অনুসারে, আসারামে বিরুদ্ধে করা মামলার তিনজন সাক্ষীর রহস্যজনক মৃত্যুর পর আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েন এই ধর্মগুরু।
যোধপুরের আদালতে ধর্ষণ মামলার বিচারের রায় ঘোষিত হলেও তার বিরুদ্ধে গুজরাটে আরও একটি ধর্ষণ মামলা চলছে। যৌন নিপীড়ন থেকে শিশু-সুরক্ষার (প্রটেকশন অন চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সস) আইনে যোধপুরের আদালতে চলছিল তার বিচারকাজ। পোসকো আইন নামে পরিচিত এই আইনে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড।
এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, আসারামের সঙ্গে আরও চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পেয়েছেন অপর দুজন।
রায় ঘোষণার পর ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটির বাবা বলেছেন, আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এই লড়াইয়ে যারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে আমরা ধন্যবাদ জানাই। এখন আশা করছি সে শক্ত সাজার মুখোমুখি হবে।
আসারামের মুখপাত্র নিলাম দুবে বলেছেন, আমাদের আইনি দলের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে ভবিষ্যতে করণীয় ঠিক করা হবে। বিচারব্যবস্থার ওপর আমাদের আস্থা আছে।
গত বছর ভারতের আরেক কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের রায় ঘোষণা হলে ভারতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে নিহত হয় অন্তত ২৩ জন। ওই ঘটনাকে বিবেচনায় নিয়ে আসারামের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভারতের ৪টি রাজ্যে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবারের রায় ঘোষণাকে ঘিরে যোধপুরের কারাগারকে নিরাপত্তা দুর্গের আদলে ঢেলে সাজানো হয়।
ধর্ষণের শিকার মেয়ে ও তার বাবার বাসস্থান উত্তরপ্রদেশেও কঠোর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।