শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ অপরাহ্ন
মোঃ জহিরুল ইসলাম সবুজ: সোনালি ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন নিয়ে প্রতিবছরই বিলের জমি জুড়ে বোরো ধান চাষ করেন কৃষকরা। চলতি বছরও অনেক আশা নিয়ে জমি আবাদ করেছিলেন তারা। ফলনও ভালো হয়েছে। এখন প্রর্যন্ত বন্যার তেমন আশঙ্কা নেই। তবুও সোনালি ধান ঘরে তোলা নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ধান কাটা শ্রমিকদের তীব্র সংকট রয়েছে। ফলে উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক ঘরে ধান তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তাই দিশেহারা হয়ে পরেছেন।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের চলতি মৌসুমে ৯হাজার ৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪৮ হাজার ১শ ৪৮ মেট্রিক টন চাল। ক্ষেতে চলতি বছর ধানের ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু সারা দেশে করোনা ভাইরাসের কারনে একদিকে যেমন একের পর এক জেলাগুলো লকডাউন করে দেয়া হচ্ছে। অন্য দিকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে জনসমাগম এড়িয়ে সামাজিক জনদূরত্ব বজায় রেখে চলতে হচ্ছে জনসাধারনকে। কৃষকরা বলছেন, উপজেলা জুড়ে ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। কিন্তু এবার কি হবে! ইতি মধ্যে করোনা ভাইরাস রোধে এই উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এর মধ্যে কিভাবে শ্রমিকরা আসবেন। এনিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা সমালোচনা। যদি শ্রমিকরা লকডাউনের মধ্যে সময় মতো আসতে না পারেন তা হলে কিভাবে ধান ঘরে উঠবে এমন দুশ্চিন্তাই কৃষদের ঘুম নেই ! এমন ভাবনা যেন দূর্বল করে ফেলছে কৃষকদেরকে।
এব্যাপারে উপজেলার কৃষকরা জানান, আমন আবাদে ধান পাকার পরেও ধান কাটতে হাতে কিছু সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুমে নানান রকম প্রাকৃতিক দূর্যোগ লেগেই থাকে। ফলে ধান পাকার সাথে সাথেই কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরতে হয়। কয়েক বছর ধরে এমনিতে ধানের আবাদে নানা কারনে লোকসান গুনতে হয়েছে। এই মৌসুমেও যদি শ্রমিক সংকটে সময় মতো ধান ঘরে তোলা না যায় তাহলে ব্যাপক লোকসানের কবলে পরতে হবে। তাই ধান ঘরে তুলতে কৃষি শ্রমিকদের অবাধ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষকরা। এছাড়াও কৃষকদের দাবি, সরকার যদি উপজেলার কৃষকদের ধান কাটার যন্ত্র দেন, তাহলে তারা নিজেরাই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, যে এলাকা থেকে ধান কাটা শ্রমিক আসবেন ওই এলাকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যায়নপত্র নিয়ে আসলে পথে প্রশাসনসহ কেহ বাঁধা দিবে না। তারা যে বাড়িতে আসবে তাদের থাকার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।