রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকেই ফোরজিসেবা পাবেন গ্রাহকরা বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির সচিব সরওয়ার আলম।
মোবাইল ইন্টারনেটে দ্রুতগতির সেবায় ফোরজি সর্বশেষ প্রযুক্তি। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত থ্রিজির এটি পরের ধাপ। বাণিজ্যিকভাবে প্রথম এ সেবা চালু হয় ২০০৯ সালে; নরওয়ে ও সুইডেনে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশেই ফোরজিসেবা চালু আছে। বাংলাদেশে সে হিসাবে এটি বেশ পরেই এলো।
দেশে ফোরজিসেবা চালু করবে গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক ও সরকারের মালিকানাধীন টেলিটক। সবাই এ নিয়ে নিজেদের প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছে।
মঙ্গলবার ফোরজিসেবার বেতার তরঙ্গ নিলামের আয়োজন করেছে বিটিআরসি। গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক তাতে অংশ নেবে। ফোরজির জন্য রবি ও টেলিটকের কাছে যথেষ্ট তরঙ্গ থাকায় তারা নিলামে অংশ নেবে না। নিলামের পর ফোরজি চালুর জন্য সময় থাকবে এক সপ্তাহ।
সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে- সব কাজ সেরে গ্রাহকপর্যায়ে ঢাকাসহ দেশের বড় বিভাগীয় শহরে সেবাটি সময়মতো চালু করা যাবে। বিটিআরসির ফোরজি নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্স পাওয়ার দেড় বছরের মধ্যে দেশের সব জেলা শহরে সেবাটি চালু করতে হবে; তিন বছরের মধ্যে সব উপজেলায়।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘২০ ফেব্রুয়ারি মোবাইল ফোন অপারেটরদের হাতে ফোরজির লাইসেন্স আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হবে। এই দিন থেকে সেবা চালু করতে তারা কারিগরিভাবেও প্রস্তুত।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন জানিয়েছিলেন চলতি বছরেই বাংলাদেশে ফোরজিসেবা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মার্চে নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ সেবার উদ্বোধন করার ঘোষণা দিয়েছিল বিটিআরসি।
তবে এ সেবা চালু হওয়ার আগে ২০টি প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
প্রস্তাবনাগুলো হল- ০১। টেলিকম খাতে আজ পর্যন্ত কী পরিমাণ লুটপাট হয়েছে তার অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। প্রযুক্তি ও টেলিকমসেবা খাতের গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষা করার জন্য একটি আলাদা সুরক্ষা আইন ও নিষ্পত্তির জন্য আলাদা সংস্থা তৈরি করা সময়ের দাবি।
০২। ফোরজিসংবলিত হ্যান্ডসেটের ওপর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।
০৩। নেট সমতার নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
০৪। ইন্টারনেটের মূল্য ও টকটাইমের ওপর কর হ্রাস করে মূল্য কমাতে হবে এবং মধ্যস্বত্ত্বভোগী অপারেটর তুলে দিয়ে কলরেট কমাতে হবে।
০৫। এমএনপির চালুর সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
০৬। বিটিএসের তেজস্ক্রিতা নিয়ন্ত্রণের জন্য মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
০৭। তরঙ্গ নিরপেক্ষতা প্রদান করতে হবে।
০৮। জালজালিয়াতির মাধ্যমে যেসব সিম বিক্রি করা হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে।
০৯। অপারেটরদের কাছ থেকে যত্রতত্র অফারের মেসেজ ও শর্টকোড নাম্বার থেকে ফোন করা বন্ধ করতে হবে।
১০। রিটেইলারদের কার্যক্রম তদারকির জন্য মনিটরিং সেল চালু করতে হবে।
১১। আইএসপি লাইসেন্সধারীদের ব্যান্ডউইথ বিক্রি ও ব্যবহারের ওপর নজরদারি রাখতে হবে।
১২। কলড্রপের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের সঠিক তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
১৩। নকল ও নিম্নমানের হ্যান্ডসেট, সফটওয়্যার, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
১৪। মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।
১৫। ফেকআইডি খুলে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
১৬। পর্নোগ্রাফি ও পাইরেসি নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
১৭। ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসআপ, ইমো, ভাইভার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যৌথ চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
১৮। সাইবার নিরাপত্তাকর্মী তৈরি করতে হবে।
১৯। ডিজিটাল আইনে ৫৭ ধারার রূপান্তর না করা।
২০। নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা দ্রুত কার্যকর করে সীমান্ত ওপারের নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে হবে।