রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন
নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীতে হাবিবা আকতার শারমিন হত্যাকান্ডে আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছে শারমিনের স্বামী মোমিনুর রহমান ও শ্বশুড় লাল মামুদ।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নীলফামারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জাহিদ হাসানের কাছে ১৬৪ধারায় জবানবন্দি দেন তারা। পরে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের সাবুল্লিপাড়া এলাকার বাসিন্দা এই দুই ব্যক্তি।
শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম, পিপিএম বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এতে জানানো হয় এক বছর আগে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার কুষ্ণপুর গ্রামের হাবিল শেখের মেয়ে হাবিবা আকতার শারমিনের সাথে ১লাখ ২০হাজার টাকায় যৌতুকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় মেমিনুরের।
বিয়ের সময় ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকি ৪০হাজার টাকার জন্য প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো তাদের মধ্যে এমনকি অকথ্য নির্যাতন চালানো হতো শারমিনের উপর।
এরই মধ্যে ৯জুন সকাল সাড়ে এগারটার দিকে শারমিনকে শ্বশুড় লাল মামুদ পা চেপে ধরে এবং মোমিনুর খাটের রোলার দিয়ে পায়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে গলা চেপে ধরে বড় স্টিলের মগ দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় শারমিনের।
গুরুত্বর অবস্থায় তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরিত করা হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ্যাম্বুলেন্স যোগে রংপুরে নিয়ে যাবার পথে উত্তরা ইপিজেড এলাকায় মারা যায় শারমিন। বিষয়টি বুঝতে পেরে এ্যাম্বুলেন্স থেকে পালিয়ে যায় মোমিনুর।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, যৌতুকের বকেয়া চল্লিশ হাজার টাকার জন্য ঘটনার দিন শারমিনকে বিষপান জনিত কারন দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অথচ বিষপানের কোন চিহৃ ছিলো না তার শরীরে। বিষয়টির রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে এবং মৃতার শরীরে আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়।
ঘটনার ১৮ঘন্টার মধ্যেই অভিযান চালিয়ে স্বামী ও শ্বশুড়কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হত্যকান্ডের সময় ব্যবহার করা খাটের রোলার এবং একটি স্টিলের মগ উদ্ধার করা হয়।
এসপি বলেন, জেলা পুলিশ অন্যায় করলে বিচার হবে এটা নিশ্চিত করতে চায় এবং মানুষও জানবে অন্যায় করলে ছাড় পাওয়া যায় না।
গেল একমাসে তিনটি হত্যাকান্ডে নয়জনকে গ্রেফতার করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রত্যেককে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আদালত থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি হবে আশা করি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল, সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম মোমিন, পরিদর্শক(তদন্ত) মাহমুদ উন নবী উপস্থিত ছিলেন।
একই সময় গেল ২৪ঘন্টায় সদেরর টুপামারীতে ২৯পিচ ইয়াবাসহ শফিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টাকারী মহির উদ্দিন এবং সৈয়দপুরে লুৎফর রহমান নামে এক ভুয়া পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।