বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গর্ভবতী কিশোরীর সন্তানের বাবা কে? স্বীকার করছে না ওই মেয়েটির কথিত স্বামী। প্রতারণা, অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ ও পিতৃপরিচয় কি হবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন কিশোরী। তার দরিদ্র পরিবার অনেকটাই দিশেহারা।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের সান্দ্রা গ্রামে। ওই গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ও বারুহাস মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী ভুক্তভোগী কিশোরী। তার বয়স সবে ১৪। একই গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে ও দিঘরিয়া মাদ্রাসার ছাত্র জুবায়ের আহমেদের (১৭) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় গোপনে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক কলেমা পড়ে বিয়ে করে। মেয়ের দাবি, অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় তারা কাবিন তথা বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে পারেনি। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করার পর দৈহিক মেলামেশায় রাজিয়ার গর্ভে সন্তান আসলে উভয় পরিবারে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনাটি প্রকাশ হলে জুবায়ের আহমেদের বাবা ফোরকান আলী বিষয়টি ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
কাবিন না থাকায় তারা সন্তান নষ্ট করার জন্য বার বার চাপ দিলেও কিশোরী তাতে রাজি হয়নি।
জুবায়েরের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় নিরুপায় হতদরিদ্র রাজিয়ার বাবা সমাজে বিচার না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং -জি আর ৮৯/২০ তাং ২৮-০৭-২০২০ ইং। মামলার পর আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশায় ভুগছে কিশোরীর পরিবার।
অপরদিকে কিশোরীকে ‘অসতী ’ আখ্যা দিয়ে জুবায়েরের পরিবারের প্রভাবে গ্রামের মাতব্বররা তাদের একঘরে করে রেখেছে। তাদেরকে সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেয়া হচ্ছে না, এমনকি কোরবানীর মাংসও তাদের দেয়া হয়নি এমন অভিয়োগ পাওয়া গেছে। যার ফলে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন তারা। বর্তমানে নয় মাসের সন্তান গর্ভে নিয়ে কিশোরী দুশ্চিন্তায় অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে।
সাংবাদিকদের রাজিয়া জানায়, আমার গর্ভে সন্তানের জন্য আমি আত্মহত্যাও করতে পারছি না, তা না হলে এতদিন কবে আত্মহত্যা করতাম।
এদিকে অভিযুক্ত জুবায়ের আহম্মেদ পলাতক থাকায় অনেক চেষ্টার পরও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার বাবা ফোরকান আলী মুঠোফোনে বলেন, যে মামলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানোর জন্য আমাদেরকে জড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, কোর্টে মামলা হয়েছে। কোর্টেই মোকাবেলা করবো।
এ প্রসঙ্গে বারুহাস ইউপি চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি সবেমাত্র জেনেছি। তবে ঘটনাটি ন্যাক্কারজক বটে। আমি চাই অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী অফিসার তাড়াশ থানার এসআই ফরিদ হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।