মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫০ অপরাহ্ন

হবিগঞ্জের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা -এর পদোন্নতি ও ঢাকায় বদলি

হবিগঞ্জের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা -এর পদোন্নতি ও ঢাকায় বদলি

মোঃ নজরুল ইসলাম খান, স্টাফ রিপোর্টারঃ
২ বছর ৯ মাস ১৫ দিন দায়িত্ব পালন শেষে হবিগঞ্জের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম, পিপিএম ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরে সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গতকাল ৪ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়। আগামী সপ্তাহে তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করবেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম, পিপিএম ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ কল্যাণে অনার্স মাস্টার্স পাশ করেন। পরে ২৪তম বিসিএস ক্যাডার এর মাধ্যমে ২০০৫ সালের ২ জুলাই পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন। সারদা ট্রেনিং শেষে সিলেট রেঞ্জে যোগদান করেন। পরে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে হবিগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। হবিগঞ্জ থেকে বদলি চলে যান পুলিশ হেড কোয়ার্টারে। সেখান থেকে মিশনে চলে যান পূর্ব তিমুর। সেখানে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে এসে সিলেট মেট্রোপলিটন-এ যোগদান করেন। পরে চলে যান হেড কোয়ার্টারে। সেখানে প্রায় ৭ বছর গোপনীয় শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। পরে সিআইডিতে বদলী করা হয়। সিআইডিতে মাত্র ২ মাস দায়িত্ব পালন করা হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে বদলী করা হয়।
২০১৮ সনের ১৮ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ উল্ল্যা হবিগঞ্জে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। সততা ও নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করায় তাঁকে ২ বার রাষ্ট্রপতি পদক ও ৩ বার আইজিপি পদকে ভূষিত করা হয়।
মোহাম্মদ উল্ল্যা হবিগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই আইন শৃংখলা উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। বিশেষ করে দাঙ্গা প্রবন হবিগঞ্জকে দাঙ্গা মুক্ত ও মাদক মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। এ জন্য জনসাধারণে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে বাল্য বিয়ে, দাঙ্গা ও মাদকের কুফল তুলে ধরে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণ করে গ্রামাঞ্চলে প্রদর্শণ করেন। স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় শুরু করেন মাদক, দাঙ্গা, বাল্য বিয়ের উপর রচনা প্রতিযোগিতা। জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব প্রতিযোগিতায় নিজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপদেশমুলক বক্তব্য প্রদান ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। ফলে জেলায় দাঙ্গা হাঙ্গামা কমে যায় প্রায় ৯০ শতাংশ। জেলায় মামলা মোকদ্দামার পরিমানও হ্রাস পেয়েছে। মাদকও তুলনামুল ভাবে অনেক করেছে।
ইতোমধ্যে মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম, পিপিএম হবিগঞ্জে মানবিক পুলিশ সুপার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। অসহায় মানুষের সাহায্যে তিনি সিদ্ধহস্ত। করোনা মহামারীর শুরু থেকেই জনসতেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি তিনি অসহায় দরিদ্র, কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের সহযোহিতায় এগিয়ে আসেন। সরকারী তেমন বরাদ্দ না পেলেও পুলিশ সুপারের আহ্বানে সারা দিয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা স্বেচ্ছায় বেতনের একটি অংশ অসহায় দরিদ্রদের সহযোগিতায় প্রদান করেন। গঠিত এ তহবিল থেকে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেন। এছাড়াও নানামুখী কর্মসুচি গ্রহণ করেন।
শত ব্যস্থতার মাঝেও ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা অংশগ্রহণকারী হবিগঞ্জের পুলিশ সদস্যদের ইতিহাস সংগ্রহ করে ২০২০ সালের ১২ জুলাই “হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরগাথা” নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ কর্তৃক প্রকাশিত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম, পিপিএম সম্পাদিত “হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরগাথা” গ্রন্থে একই মলাটে আবদ্ধ করেছেন ১৯৭১ সনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কমর্রত হবিগঞ্জের ২৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। এ অসাধ্যকে সাধন করতে প্রায় ২ বছর সময় লেগেছে বলে তিনি জানান।
পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশকে জনগনের দোরগোড়ায় নিয়ে যান।
ভিন্নমুখি গুনে গুনান্বিত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম, পিপিএম এর বদলীর সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হলে সচেতন সমাজ উনার কর্মময় জীবনের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com