মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেই ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছেন সাধারণ জনগণ। বরিশাল বিভাগের দুই জেলায় মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে সাতজন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনাক্তদের মধ্যে বরিশালে ছয় ও পিরোজপুরে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানিয়েছেন, করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়ালেও তা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালগুলো।
গত মঙ্গলবার পিরোজপুরে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। ডা. বাসুদেব জানান, জেলায় ২৪ বছরের এক যুবকের সর্বপ্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। কোনো হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে গত শনিবার তিনজন এবং আজ রোববার তিনজনসহ মোট ছয়জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু সাসপেক্টেডে প্রথম তিনজন রোগী মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। গতকাল শনিবার পরীার ফলাফলে তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হন। একই দিন আরও তিন রোগী ভর্তি হন। আজ রোববার তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হন। শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা হলেন, হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসিমা বেগমের মেয়ে তন্নী আক্তার (২৫), বরিশালের মুলাদী উপজেলার আসাদুজ্জামান (২৪), বানারীপাড়া উপজেলার আব্দুল হাই (৩৭), ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সাব্বির হোসেন (২১), রাজাপুরের উপজেলার সুব্রত মিস্ত্রী (৩২) ও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার মো. আলী (১৯)। আক্রান্ত রোগীরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেেেণ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক।
এদিকে, বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে। আরও বলা হয়েছে, বিভাগে ৪৭টি সরকারি হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগী শনাক্তকরণের জন্য পরীার সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে পরীা বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত কোনো রোগী ভর্তি হলে তাদের করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের ৪টি মেডিসিন ইউনিটে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। সন্দেহজনক রোগীদের পরীার আওতায় আনা হচ্ছে। করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু লণ কাছাকাছি হওয়ায় চিকিৎসার শুরুতে দ্বিধায় পড়ছেন চিকিৎসকরা। তবে এই ধরনের রোগীদের করোনা ও ডেঙ্গু উভয় পরীাই করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, ‘বৃষ্টিপাত, এডিসের লার্ভার ঘনত্ব, আর্দ্রতাসহ বিভিন্ন কারণে বর্ষাকালে ডেঙ্গু প্রার্দুভাব দেখা দেয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ করে লার্ভা ধ্বংসে কাজ করব আমরা। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে জমা পানি রাখা যাবে না।’ পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও আরও সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।