সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: মহান স্বাধীনতা দিবস আজ। স্বাধীনতার ৫২ বছর উদযাপন করছে সারাদেশের মানুষ। একাত্তরে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে নির্ভয়ে দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে পুরো জাতি।
বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করতে অপারেশন সার্চলাইট চালিয়ে অট্টহাসি হেসেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তারা ভেবেছিল, ২৫ মার্চের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিরোধ গড়ার সাহস পাবে না বাঙালি। কিন্তু, সে ধারণা ভুল প্রমাণ করে গণহত্যার পরদিন ২৬ মার্চই রুখে দাঁড়ায় বীর বাঙালি। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে মুক্ত স্বদেশ গড়ার সংগ্রাম শুরুর দিন আজ।
আজকের এই দিনে বীর শহীদদের যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করছে জাতি। ভোরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পর সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনে ঢল নামে সর্বস্তরের মানুষের।
ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে তারা। বড়দের হাত ধরে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ছোট্ট শিশুরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। তাদের বেশির ভাগেরই গায়ে লাল-সবুজ জামা।
বিভিন্ন সংগঠন ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় দিচ্ছেন জয় বাংলা স্লোগান। মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। সকাল ৭টার দিকে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক।
এছাড়া চট্টগাম নগরীর মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল মাঠের অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে পুলিশের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।
সকালে শেরপুর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে পূষ্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহান স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি। পরে জেলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লক্ষ্মীপুর কালেক্টরেট ভবন প্রাঙ্গনে ৩১ বার তোপধ্বনি মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলকে পুস্পার্ঘ্য অর্পন করা হয়।
এদিকে, স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে রাত বারোটা এক মিনিটে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের ঢল নামে।
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের এই দিন এসেছিল বলেই বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে জাতীয় পতাকা, বুকভরে গাওয়ার মতো জাতীয় সংগীত, পেয়েছে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অধিকার। পেয়েছে জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার আত্মশক্তি।
আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক, দিয়েছিলেন সর্বশক্তি দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার নির্দেশ। জানিয়েছিলেন চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।