বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে এক গুপ্তচর ও তার মেয়েকে বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহারে হত্যাচেষ্টার জের ধরে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত রাশিয়ার ৬০ জন কূটনীতিককে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমাবার তিনি এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কূটনীতিকদের বহিষ্কারের পাশাপাশি সিয়াটলে অবস্থিত রুশ কনস্যুলেট বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বহিষ্কৃত ৬০ জন কূটনীতিকের মধ্যে ৪৮ জন রাশিয়া দূতাবাস এবং বাকি ১২ জন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে কর্মরত আছেন। তাদের সাতদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ৪ মার্চ রাশিয়া সামরিকবাহিনীর ব্যবহৃত বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার করে এক ব্রিটিশ নাগরিক ও তার মেয়েকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমাদের মিত্রদেশ যুক্তরাজ্যে এই হামলা অংসখ্য নিরাপরাধ মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে এবং হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে এই হামলাকে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জার্মানি ও ফ্রান্স চারজন করে রুশ রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে। আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশও এমন পদক্ষেপ নিতে পারে। এসব ইউরোপীয় দেশের মধ্যে রয়েছে লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া ও চেক রিপাবলিক।
গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের সালিসবুরির একটি পার্কের কাছ থেকে সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের স্নায়ু অকেজো করে দেয় এমন বিষাক্ত রাসায়নিক নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এই দ্বৈত গুপ্তচর ২০১০ সাল থেকে যুক্তরাজ্য অবস্থান করছেন। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে রাসায়নিকের প্রভাবে এক পুলিশ কর্মকর্তাও আহত গুরুতর আহত হন।
এই ঘটনা যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ককে সংকটের মধ্যে ফেলেছে। এ ঘটনার পর ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এর জবাবে তখনই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও ২৩ ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশটিতে থাকা ব্রিটিশ কাউন্সিল ও সেন্ট পিটার্সবার্গের ব্রিটিশ কনস্যুলেট।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ঘটনায় রুশ সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগকে সম্পূর্ণ বানোয়াট, নোংরা ও অর্থহীন’ অ্যাখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। হত্যা চেষ্টার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ‘অখণ্ড সংহতি’ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক যৌথ বিবৃতিতে এই সংহিত প্রকাশ করা হয়।