রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্টাফ রিপোর্টার :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেই সাথে নির্দেশে দিয়েছিলেন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠে নেমে আন্দোলন প্রতিহত করতে । সেই প্রেক্ষাপটে ৪ আগস্ট পুলিশের পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের দমনে রাজপথে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে মাঠে নামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ক্ষমতাসীনদের বিভিন্ন সংগঠনের ক্যাডাররা। এই ঘটনায় মিরপুরে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে ১৫থেকে ২০জন কলেজ ছাত্র নিহত সহ কয়েক শতকের উপরে আহত হয়েছে গুরুতর।
মিরপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগের সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম রাফি। রাফি এর নেতৃত্বে মিরপুরে একাধিক এলাকায় ছাত্রলীগ ক্যাডার বাহিনী ছাত্রদের উপর নির্মমভাবে আক্রমণ করে। এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে ছাত্রলীগ ক্যাডার রাফি। বিভিন্ন তথ্য মতে জানা যায় রাফি একক ছত্রছায়া অবলম্বন করে মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগ কে সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। রাফির নেতৃত্বে মিরপুরে চাঁদাবাজি,টেন্ডার বাজি, জমি দখল, ফ্লাট দখল, মাদক ব্যবসা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও পুতপাতে দোকান বসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি ইনান এর বিশ্বস্ত সহযোগী হওয়ার অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে অপকর্ম করেছে রাফি।
একাধিক সূত্রে জানা যায় যুবলীগ নেতা এবং সাবেক এমপি নিখিলের নেতৃত্বে ও রাফি মিরপুরে একাধিক আন্দোলনে অস্ত্রসহ ছাত্রদের উপর হামলা করেছে। ছাত্র অভ্যুত্থানের স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সারা বাংলাদেশে ছাত্রদের উপর হামলাকারী অনেক ছাত্রলীগ ক্যাডার গ্রেপ্তার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে এবং প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করেছেন মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম রাফি। এ নিয়ে ছাত্রজনতা অনেক খুব প্রকাশ করছে। একাধিক ব্যক্তি বলেন রাফি প্রকাশ্যে অস্ত্র সদসহ নিয়ে ছাত্রদের উপর হামলা এবংগুলি বর্ষণ করেছে কিন্তু কিভাবে সে প্রকাশ্যে অলৌকিক ক্ষমতা বলে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে দিব্যি এই নিয়ে যেন কৌতূহলের শেষ নেই ছাত্র-জনতার।
মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগের সেক্রেটারি রাফির বিরুদ্ধে কলেজের টেন্ডার বাণিজ্য সহ আরো একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র মতে আন্দোলন ঠেকাতে ১৬ই আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র লাঠি হাতে জড়ো হন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের শত শত ক্যাডার এবং তারা মেয়েদের দের উপর নির্মমভাবে আক্রমণ করে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ আমরা সবাই অবগত আছি, সেদিন রাফির নেতৃত্বেও ছাত্রলীগের ক্যাডারবাহিনী টিএসসি এলাকায় যায় এবং মেয়েদের উপর আক্রমণ করে। বিভিন্ন তথ্য মতে অনেকেই বলেন রাফির নেতৃত্বে ঐদিন মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগের অসংখ্য ক্যাডারবাহিনী নিয়ে টিএসসি তে যান এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি ইমান এর নির্দেশে রাতে সেদিন টিএসসি তে মেয়েদের উপর আক্রমণ করে।
মিরপুরে ৪ ই আগস্ট অত্যাধুনিক সব ধরনের অস্ত্রের মহড়া দেখা গেছে। নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর গুলিসহ মারপিটও করে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেখা গেছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। সেই সঙ্গে ক্যাডাররা বন্দুক, রিভলবার, পিস্তলসহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও রাম দা, হকিস্টিক, রডসহ বিভিন্ন ধরনের ধারালো দেশীয় অস্ত্র হাতে হামলা চালায় ছাত্র-জনতার ওপর।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে বারবার বিদেশি সটগান লাঠিসুটা রামদা নিয়ে মিরপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর একাধিকবার হামলা করে রাফি বাহিনী। ।
স্থানীয় সংসদ সদস্য যুবলীগ নেতা মইনুল হোসেন নিখিল এর সাথে নিয়ে মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগের সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম রাফির ক্যাডারবাহিনী ছুড়ি, রামদা, রড, ফালা ও লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিরপুর ১০ নম্বরে আক্রমণ করে ছাত্র জনতার উপর।
বৈষম্যে বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র জনতার একাধিক ছাত্র বলেন আমরা যখন মিরপুর কলেজ থেকে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য তৈরি হয়েছিলাম তখন রাফির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ক্যাডার বাইরে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে বাধা গ্রস্ত করে এবংআমাদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখা।এমনকি আমাদের অনেক সহকর্মীদের নিয়ে আটকে রাখে কলেজের বিভিন্ন রুমে। এবং বিভিন্ন নির্যাতন করে এই ছাত্রলীগ ক্যাডার রাফি।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মিরপুর কলেজ ছাত্রলীগ এর সাবেক এই ক্যাডার রাফি এতসব অপকর্মের পরেও কিভাবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে এবং প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করে এ বিষয়ে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন আহাম্মেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় যারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে ও ছাত্র-জনতার উপর গুলি করেছে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর আক্রমণ করেছে এসব অস্ত্রধারী অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে।