মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
মোঃ মশিউর রহমান বিপুল, কুড়িগ্রাম:
পল্লী চিকিৎসকের দেয়া চিকিৎসায় সারা শরীর পুড়ে গিয়ে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে নুরজাহান (৯) নামের এক শিশুর। সেই ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বিছানায় কাতরাচ্ছে নুরজাহান।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ নূরুন্নবী জানান, রোগীর শারিরীক অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হয়েছে।
নুরজাহান জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের টেপারকুটি গ্রামের ইউনুছ আলীর মেয়ে। গত ২৯ জুলাই মেয়ের শরীরে জ্বর উঠায় তাকে নিয়ে একই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের পল্লী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের সবেদের মোড় ওষুধের দোকোনে যান ইউনুছ আলী। পল্লীচিকিৎসক নুরজাহানকে দেখে তিন প্রকারের ওষুধ প্রদান করে। এসব ওষুধ সেবন করার পর থেকে নুরজাহানের শীরের ছোট ছোট ফোঁসকা পড়তে থাকে। দিনের ব্যবধানে সারা শরীর কালো হয়ে পুড়ে যাওয়ার মতো হয়ে যায়। এর পর ওই পল্লী চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে টালবাহান করেন। দুই দিনের মাথায় নুরজাহানের শরীরের চামড়া উঠে যেতে থাকে এবং ক্ষতের সৃষ্টি হতে থাকে। পরে ১ আগষ্ট তাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নুরজাহানের বাবা ইউনুছ আলী জানান, মেয়ের জ্বর নিয়ে আলমগীর ডাক্তারের কাছে যাই। তিনি দেখে তার ফার্মেসি থেকে তিনচারটি ওষুধ দেন। সেগুলে খাওয়ানোর পর মেয়ের শরীরের এমন অবস্থা। পরে আলমগীরের সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলে সে টালবাহানা করে এড়িয়ে যায়। পরে মেয়েকে রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি করি। মেয়ে এমন শরীর নিয়ে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।
অভিযুক্ত পল্লি চিকিৎসক আলমগীর হোসেন সবদের মোড় নামক স্থানে আল মদিনা নামের একটি ফার্মেসী খুলে বসেছেন। যে ফার্মেসীর লাইসেন্স নেই। সেখানেই চেম্বার খুলে শিশুসহ সবধরণের রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তার প্রেসক্রিপশন প্যাডে ডাক্তার লেখেন। জেনারেল মেডিসিন প্রাকটিশনার বলে নিজেকে দাবী করেন। এছাড়াও নিজেকে সরকারী প্রশিক্ষন প্রাপ্ত চিকিৎসক বলে দাবী করেন তিনি।
নুরজাহানের বিষয়ে আলমগীর হোসেন জানান, তিনি ভুল চিকিৎসা দেননি। তিনি জ্বরের কয়েকটি ওষুধ দিয়েছেন মাত্র। ওষুধের পার্শ প্রতিক্রিয়ায় এমন হয়েছে কিনা জানেন না তিনি।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ স্বপন কুমার রায় বলেন, ঔষুধের পার্শপ্রতিক্রিয়া নির্নয়ের জন্য প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিকেল টিম রয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।