শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: দেশে ফিরতে চান নিউ ইয়র্ক সফররত প্রিয়া সাহা। প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেতের অপেক্ষা করছেন তিনি। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এই নেতা। সাক্ষাতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে বক্তব্য দেন।
ওই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়েন প্রিয়া সাহা। এখন তিনি অপেক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবুজ সংকেতের। পেলেই তিনি দেশে ফিরবেন বলে দাবি করেছে তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র।
বিষয়টি নিয়ে নিউ ইয়র্কের সাপ্তাহিক জন্মভূমি একটি প্রতিবেদন করেছে। জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার জানান, তাঁর সঙ্গে প্রায়ই কথা হয় প্রিয়া সাহার। গত বুধবারও প্রিয়া সাহা নিউ ইয়র্কে ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রতন তালুকদার বলেন, প্রিয়া সাহা জানিয়েছেন, তিনি দেশে ফিরে যেতে চান। তবে এ জন্য তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। কেবল নিজের নয়, পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও তাঁর মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি সবুজ সংকেত দেন, তবে তিনি দেশে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, এই মুহূর্তে প্রিয়া সাহা ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছেন। নিজের বক্তব্যের প্রতি তাঁর অবস্থান এখনও অভিন্ন বলে তাঁর কাছে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন- এমন দাবিও করেন নিউ ইয়র্কের এই সাংবাদিক।
বাংলাদেশ থেকে তিন কোটি ৭০ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘু ‘ডিসঅ্যাপিয়ার্ড’ বা দেশান্তরিত হয়েছে। অনেকে ‘ডিসঅ্যাপিয়ার্ড’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ ‘গুম’ উল্লেখ করে ওই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছেন। একপর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা। তাঁর ওই বক্তব্যে বাংলাদেশে এখনও সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দপ্তর হোয়াইট হাউসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িতদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশ থেকে তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ‘নাই’ হয়ে গেছে। এখনও সেখানে এক কোটি ৮০ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘু থাকে। তিনি নিজেও তাঁর বাড়ি হারিয়েছেন। কিন্তু কোনও বিচার হয়নি।
প্রিয়া সাহা কেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন- সেই ব্যাখ্যা না শুনে তড়িঘড়ি কোনো আইনি ব্যবস্থায় না যেতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত রবিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক সেমিনার শেষে একথা বলেন তিনি। এদিকে, প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার এক ডজন আবেদন হয়েছে, যার অধিকাংশই খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, প্রিয়া সাহা তাঁর বক্তব্যের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যেখানে তিনি নিজের অবস্থানে অনড় থাকার কথা বলেছেন। একজন সাংবাদিককে প্রিয়ার সাক্ষাৎকার দেওয়ার একটি ভিডিও রবিবার তাঁর এনজিও শারি’র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়; সেখানেই বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি নিজের ব্যাখ্যাগুলো তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তাঁর দেওয়া বক্তব্য সঠিক বলে দাবি করেন তিনি।