শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ডেঙ্গুতে চলতি বছর মৃত্যু ২০০ ভুয়া গ্রুপ-ওয়েবসাইটের ফাঁদে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতায় ফিরছে খাগড়াছড়ি ভালো কিছু সহজে আসে না, সংগ্রাম করতে হয়: ভাবনা গৌরীপুরে শারদীয় দুর্গোৎসবে পৌরসভার পূজা মণ্ডপ পরিদর্শক করেন আলী আকবর আনিছ নড়াগাতীতে পুজামণ্ডপ পরিদর্শন ও উন্নয়ন অঙ্গীকার: শান্তি ও ঐক্যের বার্তা গ্রাহকের টাকায় বেহিসাবি ব্যয় ৮৩৩ কোটি টাকা :৪৩ বিমা কোম্পানি তারেক রহমানের শুভেচ্ছা ও অনুদান পৌঁছে দিলেন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার অমি কুড়িগ্রাম রাজারহাটে দূর্গোৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে আলহাজ্ব সোহেল হোসাইন কায়কোবাদ-এর শুভেচ্ছা বিনিময় বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত আস্থা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের

স্থায়ী জামিন পেলেন মিন্নি

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯
  • ২৮৮

আদালত প্রতিবেদক: বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তাঁর স্ত্রী কারাবন্দি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী। এ সময় আদালত কক্ষে থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসরুল হক চৌধুরী জামিন আবেদনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে শুনানি করেন।

জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর গতকাল বুধবার শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহানা পারভীন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী বক্তব্য দেন। এ সময় মামলার সিডিসহ তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবির আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল শুনানির শুরুতে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘মিন্নিকে ১৬ জুলাই সকালে পুলিশ লাইনে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর রাতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৭ জুলাই আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই রিমান্ড আদেশেই বলা হয়েছে, আদালতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী নেই। আসামি বলেছেন, তিনি (মিন্নি) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। এর দুই দিন পর ১৯ জুলাই তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘মিন্নির তিন মাস আগে বিয়ে হয়। তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি একজন নারী। রাষ্ট্রপক্ষ বা পুলিশ বলছে মিন্নি পরিকল্পনাকারী। তাদের এই বক্তব্য সঠিক যদি ধরেও নিই, তবে সেটা বিচারে প্রমাণিত হবে। তখন তাঁর সাজা হবে কি হবে না, তা নিয়ে বলার কিছু নেই। পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষপর্যায়ে। তাই জামিন চাচ্ছি। জামিন দিলে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই।’

শুনানিকালে রিফাতকে কোপানোর ভিডিও ফুটেজ আদালতে দাখিল করে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এই ভিডিও ফুটেজ পুলিশ ১১টি খণ্ডে ভাগ করেছে। সিসিটিভি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা। সেই ফুটেজ কিভাবে ভাইরাল ও প্রচার হলো। এটা একটা অপরাধ। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’

জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এটা স্পর্শকাতর মামলা। নিজে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি হত্যার পরিকল্পনাকারী। তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে আহত করার পর মিন্নি নয়ন বন্ডের সঙ্গে মোবাইলে পাঁচবার কথা বলেছেন। ঘটনার আগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নয়ন বন্ডের সঙ্গে আটবার কথা বলেছেন। এটা কি প্রমাণ করে না তিনি জড়িত?’

শুনানিতে আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য জানতে চান। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্ত শেষপর্যায়ে। আজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু হাইকোর্টে আসার কারণে তা দেওয়া যায়নি।’

আদালত তাঁর কাছে জানতে চান, নয়ন বন্ড নামের আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না? জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়। সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এ সময় আদালতের দুই বিচারপতি মামলার সিডি (কেস ডকেট) খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। এরপর তা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে দেখতে বলেন।

সিডির সঙ্গে এসপির বক্তব্যের মিল নেই  : মামলার সিডি দেখার পর আদালত বলেন, ‘এটার কি দেখে মনে হয় যে মিন্নি দোষ স্বীকার করেছে? আমরা তো দেখছি সে সব এড়িয়ে গেছে।’ জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে দোষ স্বীকার করেছেন বলেই প্রতীয়মান হয়।’

আদালত বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে তার (মিন্নি) সম্পৃক্ততা থাকতেও পারে, নাও পারে। কিন্তু তার বিষয়ে এসপির সংবাদ সম্মেলনে যা বলা হলো তার সঙ্গে সিডির মিল দেখছি না।’ আদালত বলেন, ‘মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হয়তো পুলিশ মিন্নিদের বাসায় গেছে। তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু এসপি সাহেব কিভাবে বললেন যে মিন্নি রিমান্ডে দোষ স্বীকার করেছে?’ জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এসপি সাহেব নিজে থেকে বলেননি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন। এর জবাব দিয়েছেন তিনি।’

উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরীর মতামত জানতে চান। জবাবে এ আইনজীবী বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা বললেন, তদন্ত শেষপর্যায়ে। টিভিতে দেখেছি, মিন্নির বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত করার অভিযোগ নেই। বিচারের আগে জামিন দেওয়ার এখতিয়ার এই আদালতের রয়েছে। মেয়েটির বয়স কম। বলা হচ্ছে ১৯ বছর। ভালোভাবে পরীক্ষা করলে হয়তো দেখা যাবে ১৮ বছরের কম। তা ছাড়া মেয়েটি তার স্বামীকে হারিয়েছে। তাই এ পর্যায়ে তাকে জামিন দিলে তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করি না। তাকে জামিন দেওয়ার সপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি আছে। সে যদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতও থাকে, তবে তো সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। জামিনের সঙ্গে তদন্তের কোনো সম্পর্ক নেই।’

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com