মোঃ ইস্রাফিল: মিরপুর প্রেসক্লাবে অদ্য সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় শেফ ইউনিটি এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ -করোনাকালিন সময়ে তাদের প্রায় ২৮(আটাশ)হাজার কর্মহীন সদস্যসহ সারা দেশের প্রায় সকল হোটেল-রেস্টুরেন্টের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মৌলিক অধিকার পূরণ ও ন্যায্য মজুরি প্রাপ্তির নিশ্চয়তাসহ ১২(বার)দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। উক্ত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেফ আহসান হাবিব।এছাড়াও হোটেল -রেস্টুরেন্টের মতো সম্ভাবনাময় ব্যবসার সাথে জরিত প্রায় ৪০(চল্লিশ) লাখ শেফ, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সমাজে সেবামূলক অবদান ও বর্তমানে তাঁদের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে এসোসিয়েশনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে শেফ ইউনিটি এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেফ আহসান হাবিব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনাক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষের প্রতি সমবেদনা জানান ও আক্রান্তদের রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন।তারপর উপস্থিত সকল ইলেকট্রনিকস, প্রিন্ট ও অনলাইন প্রোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ও তাঁদের মাধ্যমে কতৃপক্ষ ও সরকারের কাছে তাদের দাবিগুলো উৎথাপন করেন–
১, করোনাকালিন সময়ে হোটেল -রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করুন।
২, করোনাকালিন সময়ে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ এবং এই সেক্টরে কর্মরত শেফসহ সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগপত্র প্রদানের বিধান বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
৩, হোটেল -রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের খাদ্য নিশ্চয়তায় রেশনের ব্যবস্থা প্রয়োজন।
৪,করোনা আক্রান্ত হলে হোটেল-রেসটুরেন্ট শ্রমিকদের হোটেল মালিক ও সরকারের দায়িত্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানাই।
৫, পূর্ণরুপে এবং পূর্ণসময়ের জন্য হোটেল রেস্তোরাঁ খোলার পূর্ব পর্যন্ত হোটেল শ্রমিকদের পরিবার প্রতি মাসিক ১০০০০/(দশ)হাজার টাকা সহায়তা প্রদানের দাবি জানাই।
৬, আগামী ঈদকে সামনে রেখে শেফসহ হোটেল -রেসটুরেন্টের সকল শ্রমিকে এর বেতন-বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানাই।
৭, করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বরনকারী হোটেল শ্রমিকদের পরিবারকে খতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থ কারার আহবান জানাই।
৮, হোটেল -রেসটুরেন্ট সেক্টরে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নির্ধারনে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের আহবান জানাই।
৯, শেফসহ সকল হোটেল শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যবীমা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।
১০, কর্মঘন্টা, ওভারটাইমসহ শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি।
১১, সংগঠন করার সাংবিধানিক অধিকারের অবাধ বাস্তবায়ন চাই।
১২, হোটেল -রেস্টুরেন্ট সেক্টরকে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে শিল্প মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্ত করে এই সেক্টরকে শিল্প হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আউয়াল বলেন,,,, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেফদেরকে অনন্য উচ্চতর শ্রমজীবী হিসাবে দেখে। তাঁদের মৃত্যু দেহ রাষ্ট্রেীয় মর্যাদায় সৎকার করা হয়। আর আমাদের দেশে আমাদের নুন্যতম সম্মানটুকুও নাই।এসোসিেয়শনের উপদেষ্টা শেফ জালাল বলেন,,, আমরা দিনে প্রায় আঠারো ঘন্টা পরিশ্রম করে মালিকদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছি ও সমাজের উপকার করেছি। আজ আমাদের বিপদে মালিক, সমাজ এমনকি সরকারের কেউ এগিয়ে আসছে না।তাই গণমাধ্যমের মাধ্যমে কতৃপক্ষকে বলতে চাই আমাদের যোক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে আমাদেরসহ এই সম্ভাবনাময় শিল্পটিকে বাঁচান। অন্যথায় আমরা বাচাঁর তাগিদে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

এসোসিয়েশনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ফাতেমা আক্তার রিতা তাঁর বক্তব্যে বলেন,,, আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে রান্না করে মানুষের মুখে খাবার তুলে দেই অথচ আজ আমাদের মুখে খাবার নাই, তা আজ কেউ দেখে না।তাই আজ এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কতৃপক্ষসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি তো দেশের সকল মানুষের অভিভাবক, আপনি তো মানবতার *মা* আমাদের দিকে সুদৃষ্টি দিন,আমাদের পরিবারকে বাচাঁন, এই অপার সম্ভাবনাময় শিল্পটিকে বাঁচান।
শেফ ইউনিটি এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক শেফ মুরাদ দেওয়ান সমাপনী বক্তব্যে বলেন–বিশ্বের নানা দেশ পর্যটন ও হোটেল মেনেজমেন্ট খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশও একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত দেশ। এ দেশেও অপার সম্ভাবনা রয়েছে এ খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেক উন্নতি করার।এই করোনাকালিন সময়ে আমরা যারা এ খাতের সাথে সরাসরি যুক্ত আছি আমরা নানা ভাবে অবহেলিত ও বঞ্চিত। তাই সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে প্রার্থনা করছি, এ শিল্পকে বাঁচান,আমদের বাঁচান ও আমাদের রুটি-রুজির পথকে সুগম করুন।