রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় এমনিতেই বিপর্যস্ত দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্রাজিলের সিনেটের এক রিপোর্টে কোভিড মহামারি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধসহ আরও বেশ কয়েকটি অপরাধে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুপারিশ করা হয়েছে।
কিন্তু বুধবার (২০ অক্টোবর) তার বিরুদ্ধে আনিত সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ৬৬ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট। জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, আমি কোনো কিছুর জন্য দায়ী না।
বর্তমানে ব্রাজিলে ছয় লাখের অধিক মানুষ প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ব্রাজিলের অবস্থান। এখন পর্যন্ত সংক্রমণ ও প্রাণহানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বোলসোনারোর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রেক্ষিত কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে সে সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে ব্রাজিলের প্রসিকিউটর ও জেনারেলের ওপর। তবে ওই প্রসিকিউটরকে বোলসোনারো নিজেই নিয়োগ দিয়েছেন এবং তিনি বোলসোনারোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবেই পরিচিত।
বিশ্লেষকদের মতে, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিষয়ে উদাসীন ছিলেন জেইর বোলসোনারো। দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব, বিধিনিষেধ এবং মাস্ক পরারও বিরোধী ছিলেন তিনি। নিজে কোভিড সংক্রমিত হওয়ার পরও বিষয়টি নিয়ে কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি বোলসোনারো। এমনকি প্রকাশ্যে ভ্যাকসিনের বিরোধিতাও করে আসছেন এই ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট।
করোনা ভাইরাস সম্পর্কে ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশের অভিযোগও রয়েছে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে। এছাড়া আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে তাকে জনসমাবেশে মাস্ক ছাড়াই অংশ নিতে দেখা গেছে। এসব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও নিজের জায়গায় অনড় ছিলেন তিনি।
ব্রাজিলে বহু লোকের মৃত্যুর পেছনে বোলসোনারো দায়ী কি-না সে বিষয়ে তদন্ত করেছেন সিনেটের ১১ সদস্যের একটি প্যানেল। এক হাজার দুইশ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্টে, ভণ্ডামি এবং অপরাধে উসকানি দেওয়া থেকে শুরু করে জনগণের অর্থের অপব্যবহার এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে বোলসোনারোকে অভিযুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।