বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষক অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর জেরে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ কাজী সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিন্ডিকেট সভার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর পর অভিযোগ আসে। বলা হয়, ওইদিন সকালে কুয়েট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লাঞ্ছনা ও অপদস্থের শিকার হওয়ার পর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গেছে, সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিম হোসেনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন, তর্ক-বিতর্ক করছেন। পরে তারা তাকে অনুসরণ করে তড়িৎ প্রকৌশল ভবনে শিক্ষকের ব্যক্তিগত কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা প্রায় আধা ঘণ্টা কক্ষের ভেতর অবস্থান করে বেরিয়ে যান। পরে অধ্যাপক সেলিম বের হয়ে বাসায় যান।
শিক্ষকের স্বজনরা জানান, বাসায় ফেরার পর ড. সেলিম বাথরুমে যান। বেলা আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন, দীর্ঘ সময় হলেও সেলিম হোসেন বের হচ্ছেন না। এরপর দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করা হয়। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অধ্যাপক সেলিম হোসেন কুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে কয়েক দিন ধরে ছাত্রলীগ নেতারা প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার তারা ওই শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন। এতে ড. সেলিম প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পান; এক পর্যায়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এ দিকে, শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সেদিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে বুধবার (১ ডিসেম্বর) উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। তারা ৫ দফা দাবি জানান। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত ও বিচার দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন শিক্ষকরা।