সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থায় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর হত্যাসহ একাধীক মামলার আসামী সুমনের অত্যাচার-নির্যাতনে অসহায় হয়ে পরেছে একটি পরিবার। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় রয়েছে ভুক্তভোগীরা।
দেশের আবাসন শিল্প ব্যাবসার নানা কাহিনি বিভিন্ন সময়ে নানা মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার “দক্ষিন গ্রীন প্রোপার্টিজ লি:” এর ঘটনাটি ব্যতিক্রম। এখানে “উড়ে এসে জুড়ে বসার” ঘটনাটি প্রবলভাবে প্রভাব ফেলেছে। মুল উদ্দ্যোক্তাদের পথে নামিয়ে দখল করেছে ঐ এলাকার আঃ মালেকের পুত্র সুমনের নেতৃত্বে প্রভাবশালী কিছু স্বার্থ লোভী। প্রজেক্ট দখল করে সুমন সন্ত্রাসী নিয়ে জমির মালিক আবুলের বাড়িতে গভীর রাতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এবং গৃহবধু ও বাচ্চাদের উপর চালায় অমানুবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন। বর্তমান সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সুযোগে গ্রাম ছাড়া করা এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে জমির মালিক আবুলকে। বিষয়টি নিয়ে কোনোরকম আইনের আশ্রয় পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবার। প্রশাসন এখনই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না-করলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণঘাতি সংঘর্ষ।
অনুসন্ধানে জানাযায়, জয়েন্ট স্টক নিবন্ধনভুক্ত দক্ষিণা গ্রীন প্রপার্টিজ লিমিটেড এর প্রজেক্ট দক্ষিণা গ্রিন সিটি অবৈধভাবে দখল করে নেয় আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর সুমন বাহিনি। এর প্রতিবাদ করলে প্রজেক্টের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের বাড়িতে সুমন বাহিনি গভীর রাতে দেয়াল ভেঙে ঘড়ে প্রবেশ করে লুটপাট চালিয়ে তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও সন্তানের উপর অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়।
মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার চরপানিয়া গ্রামের মো: গিয়াসউদ্দিনের ছেলে মো: আবুল হোসেন, মো: জায়েদ হোসেন সঙ্গীয় মো: দুলাল, আ: মজিদ, মো: শহিদুল্লাহ, মো: সুমন ও সাইফুলকে নিয়ে ২০২১ সালের ১৮ মার্চ “দক্ষিনা গ্রীন প্রোপার্টিজ লি:” নামে একটি আবাসন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন জয়েন স্টক কোম্পানির নিবন্ধনের মাধ্যমে। প্রজেক্ট হিসেবে বালুচর ইউনিয়নভুক্ত চরপানিয়া, খাসকান্দি চান্দের চর মৌজাধীন এলাকা অন্তরভূক্ত করা হয়। বিভিন্ন চরাই-উৎরাই পার হয়ে প্রতিষ্ঠানটি ক্রেতাদের মন জয় করে সাফল্যের দিকে যেতে থাকলে ঈর্ষান্বিত হয়ে খাসকান্দি গ্রামের সাহেব আলি আকবর সহ কয়েকজন প্রতিষ্ঠানের অধিকতর উন্নতির জন্য পরামর্শ সহযোগিতার জন্য যোগ দেয়। ৩-৪ বছর পর নুরুল ইসলাম গংদের সাথে যোগ দেয় স্থানীয় রাজনৈতিক ও হুন্ডি ব্যাবসায়ি সহ নানা সমালোচিত এক ব্যাক্তি। ফলে “ধরাকে সরা” জ্ঞান করে গত ১৬-০৭-২০২৪ইং তারিখে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে “দক্ষিনা গ্রীন প্রোপার্টিজ লি: এর সাইন বোর্ড ও সাইট অফিসের নামের উপর “সাউথ ভ্যালি সিটি” নামের স্টিকার লাগিয়ে দেয় এবং সাইট অফিসের রং পরিবর্তন করে দেয়। একই সাথে ঐ রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে আবুল হোসেন গংদের কষ্টার্জিত সুনাম ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চক্রান্ত করতে থাকে সুমন বাহিনি। এদিকে “দক্ষিনা গ্রীন প্রোপার্টিজ লি:” এর ক্রেতারা এই ঘটনার চরম হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পরে।
দখলকারি প্রতিষ্ঠান “সাউথ ভ্যালি সিটি”তে নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যান ও হায়দার আলি এমডি হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছেন। হায়দার আলী বিএনপির স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা। ক্ষমতা ও লোকজনের দাপটে এমডি হয়েছেন। একের পর এক পুরোনো কোম্পানির ক্রেতাদের ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। তেমনিভাবে আরেক সদস্য আ: বাতেন, যিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর থানা কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন। অবৈধ দখলদার আ: বাতেন একজন প্রতিষ্ঠিত হুন্ডি ব্যাবসায়ী বলে এলাকার সর্বাধিক প্রচারিত। এই হুন্ডি ব্যাবসার মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ টাকার দ্বারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে বলে এলাকাবাসীর ধারনা। তিনি ক্ষমতা আর প্রভাব খাটিয়ে এলাকার নীরিহ লোকদের বিএনপি কর্মী বলে জেল জুলুমের মাধ্যমে অত্যাচার করেছে। টাকা না দিলে মানুষকে নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে সুমন বাহিনির এই বাতেন। কারন বাতেনের প্রধান শক্তি ছিল স্থানীয় এম.পি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান।
সুমন আওয়ামী স্বৈরশাসকদের দোসর হয়ে আবুল হোসেনের জায়গা দখল করে তার পরিবারের জন্য বসত ঘর নির্মাণ করেছে। যেখানে তার মা ও ভাইদের নিয়ে বসবাস করে আসছে। সুমনের মা এবং মামার সাথে এই বাড়ি দখলের ব্যাপারে কথা বলে জানা যায় তারা জমি কিনেছে কিন্তু রেজিস্ট্রি হয়নি।
্এই সকল চক্রান্তকারীর অপকর্মে দিশেহারা হয়ে দক্ষিনা গ্রীন অপার্টিত লিঃ এর চেয়ারম্যান আবুল হোসেন গত ০২/০৯/২০২৪ইং তারিখে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত আবেদন জানান। সেই বিষয়ে ইউএনও জানান, মুন্সিগঞ্জ জেলার মধ্যে সিরাজদিখান উপজেলায় জমি দখল একটি বড় সমস্যা। আর বালুচর ইউনিয়নে জমি দখল করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। আমি উক্ত আবেদনের বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবো। এছাড়া অবৈধ আবাসন প্রতিষ্ঠান, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে শিঘ্রই অভিযান চালানো হবে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জমি দখলের এই বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে হুমকির মুখে পড়েছেন প্রজেক্টের জমি ক্রয় করা গ্রাহক ও যারা জমির সময়ে বিনিয়োগ করেছেন। অনেকের কষ্টে অর্জিত অর্থ দিয়ে ক্রয় করা এ জমি আবার কারো স্বপ্ন এই জমিতে কাটাবেন জীবনের বাকি মুহূর্তগুলো আবার অনেকেরই স্বপ্ন রয়েছে নিজস্ব একটি বাড়ি বা ফ্লাট তৈরি করার। তবে, বর্তমানে সাউথ ভ্যালি সিটি’র কারণে দখল করা এই জমি বুঝে পাচ্ছেন না জমি ক্রয়কৃত গ্রাহকগণ।
দক্ষিনা গ্রীন অপার্টিত লিঃ এর চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও তার পরিবার যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ আবেদন জানিয়েছেন।