রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে সত্যিকার অর্থেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি এও জানান, অসুস্থ হলেও বেগম জিয়ার মনোবল অটুট আছে। এমনকি আমাদের চেয়েও তিনি মানসিকভাবে শক্ত আছেন। শুক্রবার বিকেলে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কারা ফটকের সামনে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল এসব কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুব ভালো নেই। আর্থারাইটিজের সমস্যা বেশ বেড়ে গেছে। হাঁটতেও কষ্ট হচ্ছে। কিছুটা স্নায়ুবিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। তিনি এখন সত্যিকার অর্থেই কিছুটা স্বাস্থ্য জটিলতায় পড়েছেন। এজন্য প্রয়োজনীয় যে চিকিৎসা দরকার, দুঃখজনক হলেও সত্য তা তিনি পাচ্ছেন না। এর বড় কারণ, ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের এখনো দেখা করতে দেয়া হয়নি।’
অবিলম্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি, যারা দেশনেত্রীর নিয়মিত চিকিৎসা করেন, তাদের দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হোক এবং যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দরকার তা দেয়া হোক।’
বিকেল পৌনে পাঁচটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এর আগে গত ২৯ মার্চ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে রওনা হয়েও তার অসুস্থতাজনিত কারণে সেটি স্থগিত করা হয়।
সর্বশেষ গত ৭ মার্চ মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাত নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর আজ মির্জা ফখরুল সুযোগ পেলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বন্দি জীবনে খালেদা জিয়া অভ্যস্ত নন। তাকে বন্দি করে রাখায় শরীরের ওপর তার কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে উনার মনোবল অনেক শক্ত। আমাদের চেয়েও শক্ত মনের মানুষ তিনি। উনি বারবার একথা বলেছেন, ‘আমার জন্য আপনারা ভাববেন না। আমি ভালো আছি, আমি শক্ত আছি এবং এসব ছোট-খাটো বিষয় আমাকে কোনো সমস্যায় ফেলবে না।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ম্যাডাম মনে করেন- একটি মাত্র পথই খোলা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সেজন্য চলমান আন্দোলনকে তিনি এগিয়ে নিতে বলেছেন। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র ফিরে আসবে। সরকারেরও উচিত সেটিকে আমলে নেয়া।’
গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছর কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ওইদিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
ইতোমধ্যে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল এবং জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া হাইকোর্ট আপিল করেছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ও বিএনপি মহাসচিবের একান্ত সহকারী কৃষিবিদ ইউনুস আলী উপস্থিত ছিলেন।