মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক নিউজ: বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় প্রবেশ করছে বলে মনে করেন বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহম্মদ ইউনূস। অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশিসংখ্যক চীনা বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এবং স্থানীয় অংশীদারদের সমন্বয়ে এ অঞ্চলে একটি বড় বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহী হবেন বলেও আশা করছেন তিনি।
রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে বেইজিংয়ে আছেন মুহম্মদ ইউনূস। গতকাল সেখানে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়াকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বলেন, “আমরা চীনকে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে মনে করি। গত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্ক বেশ দৃঢ় হয়েছে, বাণিজ্য শক্তিশালী হয়েছে এবং চীনের সঙ্গে সহযোগিতার ফলে আমরা লাভবান হয়েছি। চীনের অর্জন দেখে বাংলাদেশের সবাই অনুপ্রেরণা পায়।”
ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ তত্ত্বের আবিষ্কার এবং সফলভাবে তার প্রয়োগের জন্য ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহম্মদ ইউনূস চীনের দারিদ্র দূরিকরণ কর্মসূচিরও প্রশংসা করেন।
সিনহুয়াকে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উন্নয়ন বলতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জিডিপি বা প্রবৃদ্ধির উর্ধ্বরেখাকে বোঝায়, কিন্তু চীন এক্ষেত্রে মনোযোগ দিয়েছে নিম্ন আয়ের লোকজনের জীবনমান উন্নয়নের দিকে। এ কারণেই চীন অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এবং ব্যাপক সাফল্যের সঙ্গে দারিদ্র্য হ্রাসে সক্ষম হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যকার বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। টানা ১৫ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় ১০ হাজার চীনা উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি।
ড. ইউনূস বলেন, চীন এবং বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতামূলক সম্পর্ক দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে এবং এর ফলে ইতোমধ্যেই বেশকিছু ইতিবাচক ফলাফল পরিলক্ষিত হচ্ছে।
“বাংলাদেশে চীন থেকে আমদানির পরিমাণ বাড়াচ্ছে। বর্তমানে আমাদের শিল্পখাতের কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সবই চীন থেকে আমদানি করা,” সিনহুয়াকে বলেন ইউনূস।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে রোগী, চিকিৎসক এবং ট্রাভেল এজেন্সি কর্মকর্তাদের একটি গ্রুপ চীনের কুনমিং রাজ্যে গিয়েছিলেন। রোগীদের সবাই সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং চিকিৎসক এবং ট্রাভেল এজেন্ট কর্মকর্তারা সেখানকার চিকিৎসেবার সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই পর্যবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল অদূর ভবিষ্যতে চীনে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বিষয়ক পর্যটন বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে কি না— তা খতিয়ে দেখা।
একটি আধুনিক ও ভালো স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে বলে মনে করেন ড. ইউনূস।