বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: পাঁচ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে নিহত শান্তিরক্ষী ও বেসামরিক কর্মীদের স্মরণ করেছে জাতিসংঘ।স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের ৫ জনসহ বিশ্বের ৪২টি দেশের ১৪০ শান্তিরক্ষী ও বেসমারিক কর্মীর নাম স্থান পেয়েছে এবারের তালিকায়। নিহত শান্তিরক্ষী ও বেসামরিক কর্মীদের মধ্যে ১২৩ জন সামরিক বাহিনী, ৩ জন পুলিশ এবং ১৪ জন বেসামরিক সদস্য রয়েছেন।
কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীসহ বেসামরিক নাগরিকগণের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই স্মরণ সভা শুরু করা হয় ভায়োলিনের করুন সুর পরিবেশনের মাধ্যমে। মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে নিহতদের স্মরণ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাক ও নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি গুস্তাভো মেজা-কোয়াড্রা। জাতিসংঘ মহাসচিবের আহবানে নিহতদের স্মরণে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আত্মোদানকারী জাতিসংঘের সকল শান্তিরক্ষী ও বেসমরিক কর্মীর প্রতি গভীর শোক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সহনশীলতা ও উদারতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন। সমবেত সুধিমন্ডলীর উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, জাতিসংঘের নীল পতাকা বিশ্বের অসহায় মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নত ভবিষ্যতের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে আশার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। অসহায় এই মানুষেরা তাঁদেরই উপর নির্ভর করে যাঁরা জাতিসংঘে সেবা দেওয়ার জন্য নিজেদেরকে নিবেদিত করেছেন। আজ, আমরা আত্মদানকারী সকল সহকর্মীদের স্মরণ করছি এবং তাদের উদারতা ও অবদানের প্রতি স্বীকৃতি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শান্তিরক্ষী, মানবিক সহায়তাদানকারী এবং অন্যান্য সহকর্মীদের সাহস ও প্রতিশ্রæতি ব্যতীত, আমরা প্রতিদিন যা করছি, তা অর্জন করতে পারতাম না। বিশেষ করে কঠিন ও বিপজ্জনক পরিবেশে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এটা আমাকে ক্ষুব্ধ করে যখন দেখি খুব সামান্য কোন কারণে আমাদের উপর আক্রমন হয় যা কোন কোন ক্ষেত্রে যুদ্ধপরাধের শামিল। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীকর্মীদের উপর আক্রমণকারীদের প্রতিহত করতে এবং শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের নিরাপত্তা উন্নত করতে তাঁর দৃঢ় প্রতিশ্রæতির কথা ব্যক্ত করেন।
জাতিসংঘ নিযুক্ত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী সরবরাহকারী দেশ। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৪৩ জন শান্তিরক্ষী মৃত্যুবরণ করেছেন।