শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন

‘ষড়যন্ত্রকারীরা পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ঠেকাতে চেয়েছিল’

‘ষড়যন্ত্রকারীরা পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ঠেকাতে চেয়েছিল’

ভিশন বাংলা ডেস্ক: পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধে ষড়যন্ত্র করায় নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা গরীবের সুদের টাকায় বড়লোক হয় তাদের আবার কিসের দেশপ্রেম। তাঁদের দেশপ্রেম থাকতে পারে না। দেশপ্রেম থাকলে দেশের উন্নয়ন বিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারতো না। পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ঠেকানোর চক্রান্ত করতে পারতো না।

আজ রবিবার (১৪ অক্টোবর) মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর নামফলক উন্মোচন ও কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর ৬০ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। শিগগিরই এ সেতুর সুফল জনগণ ভোগ করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞ জানাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে থেকে। প্রবাসীও সবাই আমাকে আশ্বাস দিয়েছে। বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করি।

তিনি বলেন, আমরা আজ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি। পদ্মা সেতু নিয়ে আমার সরকার ও পরিবারের নামে দুর্নীতির কথা উঠে। পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের জাতীয় আন্তজার্তিকভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে। অপমানিত হতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন কেউ ধাবাইয়া রাখতে পারবা না। বাঙালীকে কেউ ধাবাইয়া রাখতে পারে না।

তিনি বলেন, বহুমূখী পদ্মা সেতু ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এ সেতুর কাজ করা অনেক কঠিন। খরস্রোত নদী তাই সেতু নির্মাণে অনেক কঠিন ছিল। এরইমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ শেষে হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা জমি দিয়েছে তাদের জন্য আমরা প্লট দিয়েছি। তাদের জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তারা এ সেতুর জন্য ভিটে বাড়িও ছেড়ে দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সাহসের সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কোটি মানুষের প্রাণের দাবি পূরণ করতে চলেছি। সব চক্রান্ত রুখে দিয়ে বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা পারি। কারণ বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং তাদের জীবনযাত্রার উন্নয়ন হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্প দেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প। সেতুটির নির্মাণ কাজ টেকনিক্যাল, সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং। গুণগতমান শতভাগ ঠিক রেখ রাখার স্বার্থে আমাদের ধৈর্য্য ও সর্তকতার সঙ্গে এর সফল বাস্তবায়নে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ২০০১ সালের ১২ জুলাই মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৩ সালের ৪ মে নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের মূল পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো পদ্মা সেতুর নামফলক উন্মোচন করেন। একইসঙ্গে রেলসংযোগসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

সকালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি এবং এর রেল সংযোগের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করতে মাওয়ায় সেতু এলাকায় যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেলা ১১টার কিছু সময় পর পদ্মা সেতু নাম রেখেই সেতুর নামফলক উন্মোচন ও প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন শেষে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নৌপরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকসহ আওয়ামী লীগ নেতারা।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com