মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
মোংলা প্রতিনিধি: বন্দরের নিয়োগে ঘুষ বানিজ্যের আশংখ্যায় আবেনকারীদের (চাকরী প্রার্থী) মধ্যে মেধার মুল্যায়ন নিয়ে আতংক দেখা দিয়েছে। অতিতের বহু নিয়োগে নানা অনিয়মের কারণে এবার নিয়োগে বানিজ্য বন্ধ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ চান তারা। আবেদনকারীদের অভিভাবকরা বলছেন, প্রতিনিয়ত অর্থ বানিজ্যের মাধ্যমে চলমান ক্যাটগরীগুলোতে নিয়োগ হলে সম্ভবনাময় এ বন্দরের কায্যক্রমে সচ্ছতা আসবে না। আর মেধাবীরা তাদের মেধার বিকাশ ঘটনাতে না পারলে সরকারের উন্নয়ন মুলক পদক্ষেপগুরোর প্রতি দেখা দিবে অনিহা। তবে পুর্বের বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলেও ব্যবস্থা গ্রহন না করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
সরকারের সদিচ্ছায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে মোংলা বন্দরের কর্মযোগ্য। উন্নয়ন চলছে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলোতে। মোংলা বন্দরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সে হিসেবে চাহিদা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে সকল শুন্য পদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তবে অতীতে নিয়োগে নানা অনিয়ম আর অর্থ বানিজ্যের কারনে যোগ্য প্রাথীরা তাদের যোগ্যপদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গেল ১৯ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবারো ২৭ টি শুন্য পদের অনুকুলে ৩৩৪ জন জনবল নিয়োগের জন্য আবেদন আহবান করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক প্রশাসন গিয়াস উদ্দিন জানান, বিজ্ঞপ্তির ২০ অক্টোবর নিয়োগে আবেদনের শেষ সময় ছিল। এ সময় পর্যন্ত ২৭টি পদের অনুকুলে আবেদন পড়েছে ৫০ হাজার ১১৯টি। কিন্তু আবেদনকারীদের অধিকাংশ বলছেন, বন্দরের চাকরী অতিতের মতো এবারও নিয়োগে বানিজ্যের আবাস পাওয়া যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আবেদনকারী অভিবাবকরা বলছেন, আবেদনের তারিখ শেষ হতে না হতেই দালাল চক্র পদ অনুসারে সাত থেকে বার লাখ টাকা চুক্তি শুরু করেছেন।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ শাজাহান ছিদ্দিকি বলেন, বন্দরের নি¤œ শ্রেনীর কর্মচারী হয়ে পদন্নোতি পেতে ভুয়া সাটিফিকেট দাখিল, নৌ পরিবহন মন্ত্রীর সাক্ষর জাল করাসহ নানা অপকর্মের জন্ম দিয়েছেন বন্দরের কর্মচারী সোহেল রানা। তিনি একজন ইংল্যান্ড ড্রাইভার হয়ে ভুয়া সাটিফিকেট দাখিল করে প্রকৌশলী পদে পদ উদন্নোতী পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর ওই জাল সাটিফিকেট দাখিল করার দায়ে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম আর দুনর্তিীর দায় ব্যবস্থা নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সাজা থেকে রেহাই পেতে তিনি (সোহেল রানা) নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করেন। এ নিয়ে চলছে তদন্ত, গঠন করা হয়েছে তিন তিনটি তদন্ত কমিটি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে দফায় দফায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরও তিনি চাকরী করছেন বহাল তবিয়তে। অন্য দিকে, মোংলা বন্দরে কর্মকর্তা আর কর্মচারী নিয়োগ আর পদন্নোতীতে অতীতে ব্যাপক দূনীতি আর অর্থ বানিজ্য হয়েছে। ভুয়া কোটায় নিয়োগ পেয়ে বহাল তবিয়তে চাকুরী করছেন দুইজন তারা স্বামী-স্ত্রী। ২০১৩ সালে বন্দরের ট্রাফিক বিভাগে রাজস্ব শাখায় স্বামী-স্ত্রী নিয়োগ পান প্রশাসন বিভাগে। ভুয়া কোটায় নিয়োগ পাওয়া এর মধ্যে আবার পদন্নোতিও পেয়েছেন। তবে নিয়োগ পাওয়া ইবনে হাসান দাবী করেন, তারা ইভয়ে পৌষ্য কোটায় আবেদন করেছেন কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়োগ দিয়েছেন, যদি ভুল হয় এ জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ। শুধু এতেই শেষ নয়, ২০১৩ সালে নিয়োগ পাওয়া ৩১২ জন নিয়োগ নিয়ে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। দুনির্তীর আর অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ নেয়া ওই সকল কর্মচারীদের তলব করে দুদক। আগের সকল অনিয়মের সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িতের অভিযোগ ছিলো বন্দর কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) বেশ কয়েক নেতার বিরুদ্ধে। বন্দরে নিয়োগে বানিজ্যের জন্য ওই কতিপয় সিবিএ নেতারা দন্ধে জড়িয়ে পড়েন তৎকালীন বন্দর চেয়ারম্যান সাথে। তবে সিবিএ’র বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারন সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, বর্তমান সিবিএ’র কার্যনির্বাহী কমিটি কোন নেতার বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেলে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আর বর্তমান বন্দরে ২৭টি শুন্য পদের ৩৩৪জন কর্মচারী নিয়োগ কমিটির প্রধান মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) আফসানা ইয়াসমিন জানান, বন্দরের এবারের নিয়োগে কোন প্রকারের অর্থ বানিজ্যের সুযোগ নেই। নিয়োগ পরিক্ষায় শতভাগ মেধার মুল্যায়ন করা হবে।