নিজস্ব প্রতিবেদক: আম্পানের আঘাতে দেশের সাত জেলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা, বরগুনা, ভোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে অনেক গ্রাম। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অন্তত ৮টি জেলা। বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ফসল হানির পাশাপাশি রাজশাহীতে ঝরে গেছে ২০ শতাংশ আম।
ঘূর্ণিঝড়ে ভোলায় তিনজন, যশোরে তিনজন, পটুয়াখালীতে দুইজন, সাতক্ষীরায় দুইজন, পিরোজপুরে একজন, ঝিনাইদহে একজন ও চট্টগ্রামে সন্দ্বীপের একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো সাতক্ষীরা জেলা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। আশাশুনি, শ্যামনগর এবং কালীগঞ্জে বেড়িবাঁধের ২৩টি স্থান ভেঙে যাওয়ায় অসংখ্য মাছের ঘের ভেসে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গাবুরা ইউনিয়ন, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনিতে। উপড়ে গেছে গাছপালা, বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও পোল্ট্রিফার্ম। মোবাইল টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক স্থানে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
খুলনার উপকুলীয় এলাকা কয়রায় বেড়িবাঁধের ৫টি স্থান ভেঙে অন্তত ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দাকোপ ও কয়রা উপজেলা । এছাড়া, বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বরগুনা সদরের আয়লা বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাথরঘাটার জিমতলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কুমিরমারায় ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের। লবণগোলা, বুড়িরচর, কালিবাড়ি এলাকায় স্লুইচগেট নির্মাণের জন্য তৈরি বাঁধ ধসে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় বরিশালের বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ফসলের। জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে ।

আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, ভারতের সমুদ্র উপকূল দিঘা, বকখালী, কাকদ্বীপ, তাজপুর ও সুন্দরবন অংশে তাণ্ডব চালিয়ে আম্ফানের অগ্রভাগের প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে শুরু করে গতকাল বিকেল ৪টা থেকে। সুপার সাইক্লোনিক ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সাতক্ষীরা-খুলনা দিয়ে প্রবেশ করে ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে। ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা দিয়ে পরবর্তী তিন থেকে চার ঘণ্টায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে। যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুুর ও গাইবান্ধা হয়ে আবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে রাত ১টার দিকে।