তেলের দাম বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে সামান্য বেড়েছে। আগের দিন ২.১ শতাংশ পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (EIA) প্রকাশিত আশাব্যঞ্জক ডেটা মূল্যবৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ০৩:৩৮ জিএমটি পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়েছে ১৬ সেন্ট বা ০.২৫ শতাংশ, দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি **৬৩.৬৭ ডলার**। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) বেড়েছে ১৭ সেন্ট বা ০.২৯ শতাংশ, দাঁড়িয়েছে **৫৯.৬১ ডলার**।
বুধবার তেলের দাম ২.১ শতাংশ কমে যায়। এর পেছনে বড় কারণ ছিল রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন, যেখানে বলা হয়—যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রণীত একটি খসড়া শান্তিচুক্তি মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে। এতে ভূখণ্ড ছাড়ের মতো শর্ত রয়েছে বলে দুটি সূত্র জানিয়েছে। এই তথ্য বাজারে এমন ধারণা তৈরি করে যে যুদ্ধ শেষ হলে রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পথ খুলতে পারে, যা সরবরাহ বাড়িয়ে দামে চাপ সৃষ্টি করবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দুর্বল হতে পারে—এই উদ্বেগই মূলত দামের ওপর চাপ তৈরি করেছে। তবে আইএনজি–এর বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন—ইউক্রেন এমন কোনো চুক্তি সহজে মেনে নেবে বলে মনে হয় না, কারণ এতে রাশিয়ার প্রতি সুবিধা তৈরি হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার চেষ্টায় আছে—এটি রুশ তেলের ওপর সম্ভাব্য নতুন নিষেধাজ্ঞার উদ্বেগ কিছুটা শিথিল করে।
এদিকে EIA–র তথ্য বাজারে কিছুটা সহায়তা দেয়। রিপোর্টে দেখা গেছে, ১৪ নভেম্বর শেষ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রুড তেল মজুত ৩.৪ মিলিয়ন ব্যারেল কমে ৪২৪.২ মিলিয়ন ব্যারেলে নেমেছে—যেখানে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ছিল মাত্র ৬০৩,০০০ ব্যারেল হ্রাস। ভালো রিফাইনিং মার্জিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি চাহিদা বৃদ্ধি এই পতনের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
যদিও ক্রুড স্টক কমেছে, কিন্তু একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিন ও ডিস্টিলেটের মজুত বৃদ্ধি পেয়েছে—যা চাহিদা কিছুটা কমার ইঙ্গিত দেয়।
বাজার এখন নজর রাখছে ২১ নভেম্বরের ডেডলাইনের দিকে, যেদিন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে কোম্পানিগুলোকে রাশিয়ার প্রধান দুই তেল উৎপাদক—রসনেফ্ট ও লুকওয়েলের সঙ্গে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানা উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র আরোপ করেছে।
সূত্র- Reuters.