নরসিংদীতে জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের বিল নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। রেকর্ড বহিতে নাম থাকা সত্ত্বেও বিল পাচ্ছেন না পঁচাত্তর বছর বয়সী ভুক্তভোগী সামসুদ্দিন। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বৃদ্ধ সামসু উদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে দেখা করতে এসে বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন এবিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখাকরতে এলে প্রতিবারই প্রতিপক্ষরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রকাশ্যে হুমকিসহ হামলা চালাচ্ছে। সকাল থেকে জেলা প্রশাসক কায্যালয়ে একদল সন্ত্রাসী প্রতিপক্ষে সাথে জেলা প্রশাসক কায্যালয়ে পাহাড়া দিচ্ছে আর বিভিন্ন প্রকার প্রননাশের হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীদের ভয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভোগছেন বলে জানান তিনি। তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে গত ২৯ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। নরসিংদীর পশ্চিম ব্রাহ্মন্দী এলাকার বাসিন্দা সামসু উদ্দিন। এর নেপথ্যে রয়েছে এল এ অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জালিয়াত চক্রে চেষ্টা অধীগ্রহনের বিল নেওয়ার চেষ্টা, এমনটাই অভিযোগ ভূক্তভোগীর। ২০২০ সালে নরসিংদীতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তার ভোগ-দখলীয় বিলাসদী মৌজার ৩৬৬ আর এস দাগের ৪.৫০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এল. এ. শাখার রেকর্ড অনুযায়ী, মামলা নং- ০১/২০২০-২১ তে এওয়ার্ড বহিতে তার নাম লিপিবদ্ধ আছে। কিন্তু গত চার বছর ধরে ক্ষতিপূরণের বিল বুঝে নিতে পারছেন না তিনি। এল এ কেইসের বিপরীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব)আদালতের বিচারক মাহমুদা বেগমের আদালতে বিবিধ মোকাদ্দমা নং ৫৯/২১ যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মো: রাশেদ রানা নামে এক ব্যক্তি একটি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে বিলটি নিজ নামে উত্তোলনের জন্য এল, এ শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন যাবৎ হয়রানী করছে। এ কারণেই বারবার ঘুরেও তিনি তার ন্যায্য বিল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, অধিগ্রহণের সময় আমার নামেই এওয়ার্ড হয়। কিন্তু বিল নিতে গেলেই রাশেদ রানা ও তার স্ত্রী রুমানা ইয়াসমিন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এল এ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভিন্ন অজুহাতে বিল না দিয়ে ঘুরাচ্ছে। অধিগ্রহনের পর থেকে রাশেদ রানা নামে এক ব্যক্তি আম-মোক্তারনাম একটি জাল দলিল দিয়ে বিলটি নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি সুবিচার পেতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে আসলে জেলা প্রশাসকের কায্যালয়ের সামনেই আমাকেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর নানা হুমকি-ধমকি সহ অতর্কিত হামলা চালায় রাশেদ রানা, তার স্ত্রী রুমানা ইয়াসমিন ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
অভিযোগকারী নিশ্চিত করে বলেন, তফসিলভুক্ত সম্পত্তিটি খরিদ সূত্রে মালিক হয়ে নিজ নামে নামজারী ও জমাভাগ করে ভোগ দখলে আছেন তিনি। এখন নিরুপায় হয়ে তিনি তার প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি লিখিত আবেদনে বিল জালিয়াতি রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। জনস্বার্থে জমি অধিগ্রহণ হলেও, দীর্ঘসূত্রিতা এবং প্রতারণার এমন প্রচেষ্টা সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগীর নিকট জানতে চাইলে গণমাধ্যম কর্মীদের ওপরও হামলা চালানোর চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল, এ শাখার কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব)সহ জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করার জন্য চারদিন ঘুরেও দেখা করতে পারেননি বৃদ্ধ সামসুদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা, অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদা বেগমের সাথে গণমাধ্যমকর্মীরা দেখা করতে চাইলে তিনি এবিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বৃদ্ধ সামসু উদ্দিনের নামে এওয়ার্ড বহিতে অধীগ্রহনের বিল লিপি হয়ে থাকলে অবশ্যই তাকে বিল দেওয়া হবে।