রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নরসিংদীতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জালিয়াতি: ভূমি অধিগ্রহণে কোটি টাকার অনিয়ম, দুদুকে অভিযোগ ভুটানকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু:প্রধান উপদেষ্টা এগুলো ‘আফটার শক’, আবারও ভূমিকম্পের ঝুঁকি আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম সাকিব আল হাসানকে এবার দুদকে তলব নরসিংদী চীফজুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত প্রাঙ্গণে ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা স্ত্রী-কন্যার ছবি শেয়ার করে নারীদের ৫ প্রতিশ্রুতি দিলেন তারেক রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল কবিতা পড়লে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে কী ঘটে? নরসিংদীতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভূমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির অভিযোগ

আগৈলঝাড়ায় সরকারী রাস্তার পাশে ঝুপড়িতে থাকা অসহায় মাসুদা ছেলেকে নিয়ে দুই যুগ ধরে অমানবিক জীবনযাপন

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০
  • ৩২৭

মোঃ জহিরুল ইসলাম সবুজ. আগৈলঝাড়াঃ
“আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।” আসমানীর কথা আপনাদের মনে আছে? পল্লীকবি জসীমউদদীনের অমর চরিত্র আসমানী মারা গেছেন। বেচে আছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার আর এক আসমানী। এটা কল্প কোন কাহিনী নয়! রক্ত-মাংসের মানুষরূপে বেচে আছে। পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের আসমানী কবিতার আসমানীর চরিত্রর মতোই রক্ত-মাংসের মানুষরূপে বেচে আছে মাথার উপর চালাবিহীন ঝুপড়িতে চরম অমানবিকতার মধ্যে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আরেক আসমানীর চরিত্র জীবন সংগ্রামী বিধবা মাসুদা বেগম। স্বামীর মৃত্যুর পরে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সরকারী রাস্তার পাশে প্রায় দুই যুগ ধরে বসবাস করলেও নজরে আসেসি কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিদের। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বছরের পর বছর ধর্ণা দিয়েও মাসুদার কপালে জোটেনি সরকারী সাহায্যের একটি ঘর বা ঘর তোলার কোন উপকরণ সাহায্য।
সরেজমিনে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের রাস্তার পাশে বসবাসকারী বিধবা মাসুদা বেগম (৪৮) জানান, এই গ্রামের লাল চান মিয়ার সাথে ত্রিশ বছর পূর্বে একই উপজেলার অশোকসেন গ্রামের মন্নান মোল্লার মেয়ে মাসুদা বেগম এর বিয়ে হয়।
বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে তাকলেও প্রায় দুই যুগ আগে স্বামী চান মিয়া মারা যাবার পরে বাপরে ভিটায় তার জায়গা না থাকার কারনে ওই বছরই মাগুরা বেইলী ব্রিজের পাশে ঝুপড়ি তুলে তাতেই বসবাস করতে শুরু করেন।
মানুষের বাড়ি ঝি’য়ের কাজ করে কোন রকমে পেট চালিয়ে একমাত্র পুত্রসন্তান কাওসারকে নিয়ে শুরু করেন সংগ্রামী জীবন যুদ্ধ।
সারা জীবন অন্যের বাড়ীতে ঝি’য়ের কাজ করে জীবন জিবিকা চালাতে পারলেও বত’মানে করোনা প্রাদুর্ভাবকালে কাজের সুযোগ না থাকায় সংগ্রামী মাসুদা বেগমের বেঁচে থাকার আশা প্রতিনিয়িত ীণ হয়ে আসছে।
কান্না জড়িত কন্ঠে জানান মাসুদা বেগম বলেন, আধাপেটা খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন যাপনকরতে হচ্ছে তাদের। রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঞ্ঝা মাথায় নিয়ে ছেলেকে নিয়ে ঝুপড়ির মধ্যে কোন রকমে মাথা গোজেন তিনি। সহ¯্র ফুটো টিনের ছাউনির ঝুপড়িতে ভাঙ্গা একটা চৌকি ছাড়া চোখে পড়েনি কিছুই। ওই চৌকির উপরেই তার কাঁথ- কাপড়, সহায় সম্বল আর পাতানো সংসার। বর্ষায় পানি পরে ভিজে যায় সবকিছু। বৃষ্টির পানি থেকে নিজেদের রেহাই করতে পলিথিন টাঙ্গিয়ে ভর্ষার রাতে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় মাসুদার।
মাসুদা বেগম আরও বলেন, স্ব^ামীর মৃত্যুর পরে স্থানীয় মেম্বর, চেয়ারম্যানদের কাছে একটি ঘরের জন্য অনেকবার গিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে দেয়া হয়নি কোন ঘর বা ঘরের সহায়তা। াই বাধ্য হয়ে রাদে পুরে, বৃষ্টিতে ভিজে সরকারী রাস্তার পাশে এই ঝুপড়িতে বসবাস করছেন তিনি।
রাতের গভীরতায় ও নির্জনতায় বেঁচে থাকার আমা প্রদিনি ক্ষীণ হয়ে আসছে। অন্ধকারে রাস্তার শিয়াল, কুকুরের ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে হয় তাকে। মাসুদা আক্ষেপ করে বলেন, দয়ালু প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের ঘর দেয়, কিন্তু কোন মেম্বর-চেয়ারম্যান বা প্রশাসনের স্যারেরা একটি ঘর দেয়নি আমাকে।
মাগুড়া এলাকার বসবাসকারী সংশ্লিষ্ঠ রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস তালুকদার বলেন, এমন অসহায় একুিট পরিবারের কথা তার জানা ছিলনা। তবে জরুরী ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই পরিবারকে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন ইসলাম চৌধুরী জানান, বিধবা দরিদ্র মাসুদা বেগম যদি আশ্রায়ন প্রকল্পে থাকতে চায় তাহলে তাকে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। অন্যথায় যদি ওই অসহায় নারী ৫ শতাংশ জায়গা সংগ্রহ করতে পারেন তবে তাকে একটি ঘর সরকারী দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com