সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দাম্পত্য কলহের জের ধরে বুধবার রাতে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংশভাবে স্ত্রী’কে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে লাশ ফেলে পালিয়েছে পাষন্ড স্বামী। এসময় নিহতের এক বছরের শিশু পুত্রকে অন্যত্র ফেলে রেখে যায় ঘাতক স্বামী।
ঘটনার তিন ঘন্টার মধ্যে গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম থেকে ঘাতক স্বামী তামিম শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তামিম শেখ প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তর জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বুধবার রাত সোয়া একটার দিকে উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের পাশে একটি ঘেরের পাড় থেকে রাশিদা বেগম (৩৫) এর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাশিদা আগৈলঝাড়ার নগড়বাড়ি গ্রামের মৃত করিম শাহ’র মেয়ে। একই সময়ে কান্নার আওয়াজ পেয়ে নিহত রাশিদার দশ মাস বয়সী শিশুপুত্র তনিমকে মায়ের লাশের ৫শ গজ দূরে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসি আরও জানান, লাশ উদ্ধারের পরপরই ঘটনার পারিপাশি^ক অবস্থা দেখে নিহত রাশিদার স্বামীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন তিনি।
ওসির নির্দেশে তাৎক্ষনিক থানার ওসি (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে ৩ঘন্টার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার বেদগ্রাম থেকে ওই গ্রামের আনোয়ার শেখ এর ছেলে ঘাতক স্বামী তামিম শেখকে রক্তমাখা জুতা, জামাপড়া অবস্থায় গ্রেফতার করেন। ঘাতক স্বামী তামিম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যবসা ও কাজ করতো বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘাতক স্বামী পুলিশের কাছে অকপটে স্ত্রী রশিদা হত্যার প্রাথমিক দায় স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘাতক স্বামী তামিমকে নিয়ে পুলিশ হত্যার ঘটনাস্থল বেদগ্রাম পরিদর্শন ও হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করেছে।
ঘাতক স্বামীর বরাত দিয়ে ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, দাম্পত্য কলহের জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। নিহত রাশিদার এটা দ্বিতীয় বিয়ে এবং ঘাতক স্বামী তামিমেরও দ্বিতীয় বিয়ে। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তামিমের আগে স্ত্রীর দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে, বর্তমানে রাশিদার ঘরে ১০ মাস বয়সী তানিম নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। রাশিদা তার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর কারণে আগৈলঝাড়া উপজেলার ১নং ব্রীজ সংলগ্ন এলকায় শিশু পুত্র নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ঘটনার দিন বুধধবার নিহত রাশিদাকে নিয়ে গোপালগঞ্জের একটি হোটেলে অবস্থান করে ঘাতক স্বামী। রাত আটটার পরে সেখান থেকে বের হয়ে অপর লোকজনের সহায়তায় রাশিদাকে হত্যা করে ওই রাতে একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে আগৈলঝাড়ার উল্লেখিত স্থানে রাশিদার লাশ ও তার শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ঘাতকেরা।
হত্যার আলামত উদ্ধার ও অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলেও জানান ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার।