শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
আ. মালেক রেজা, শরণখোলা (বাগেরহাট) থেকে : চলতি বছর মধু সংগ্রহ মৌসুমে কাঙ্খিত মধু সংগ্রহ করতে না পেরে গত তিন/চার দিনে দুই শতাধিক মৌয়াল বাড়ি ফিরে এসেছেন। বনে মৌয়ালরা মধুর চাক পাচ্ছেন না। তবে, দু’একটি চাক পাওয়া গেলেও মধুর পরিমান খুবই কম। মহাজনদের কাছ থেকে নেয়া অগ্রীম (দাদন) টাকা পরিশোধ করা নিয়ে মৌয়ালরা এবার বেশ চিন্তিত। তাদের ধারণা সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরা ও সময়মত বৃষ্টি না হওয়ার কারনে মৌমাছির বাসা কমে গেছে।
পূর্ব সুন্দরবন বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর মধু আহরণের জন্য শরণখোলা রেঞ্জ থেকে ৪১টি পাশ (অনুমতিপত্র) ইস্যু করা হয়। যার অনূকূলে প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌয়াল ১৫ দিনের পাশ নিয়ে গত ১ এপ্রিল সুন্দরবনে যাত্রা করে। অনেক কষ্টে মৌচাকের সন্ধান পাওয়া গেলেও আশানুরুপ মধু পাচ্ছেন না মৌয়ারা। কাঙ্খিত মধু না পেয়ে মৌয়ালরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। এছাড়া গত ৩/৪ দিনে ১৮টি পাশ মৌয়ালরা শরণখোলা স্টেশন অফিসে জমা দিয়ে দুই শতাধিক মৌয়াল নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।
সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী, বগী ও তেরাবাকা গ্রামের অনেক মৌয়ালরা জানান, মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নিয়ে মধু সংগ্রহে গিয়ে মধু না পেয়ে ফেরত আসতে হয়েছে। কীভাবে মহাজনের টাকা পরিশোধ করব, সেই চিন্তায় আছি। তারা আরো জানান, ১১ দিন বনে ঘুরে ১২ জনের একটি দল ৩০ কেজি ও অন্য আরেকটি দল ১০ দিনে ১৫ টি চাক থেকে ১০ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পেরেছে। এতে তাদের খোরাকীর টাকাও উঠে আসবে না বলে জানান তারা।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ও স্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, অব্যাহত খরা ও অনাবৃষ্টির কারনে সময়মত গাছে ফুল না ফোটায় এ বছর সুন্দরবনে মৌমাছি আগের মতো বাসা বাঁধেনি। তাই বনে মধু সংকট দেখা দিয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন।