মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার দেশকে ‘ফোকলা’ দেশে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বললেন ‘আমরা আইএমএফ থেকে টাকা ধার নেব না। আমরা এখন শক্তি বাড়াচ্ছি অর্থনীতির মধ্যে’। কালকে আমরা পত্রিকায় দেখলাম তারা সাড়ে চার শ বিলিয়ন ডলার ধার চেয়েছে আইএমএফের কাছে। আসলে ভেতরে ভেতরে সরকার শূন্য হয়ে গেছে। তারা দেশটাকে ফোকলা দেশে পরিণত করেছে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লোড শেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
দেশের অর্থনীতির অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে এখন ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার। এই ৩১ বিলিয়ন ডলার সঠিক নয়। এখানে ৮/৯ কোটি ডলার আছে সোনা। আর শুধু ব্যবহার করা যায় এর পরিমাণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন ১৬ বিলিয়নের বেশি নয়।
তিনি বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধবংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সরকারকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না, আর কোনো সময় দেওয়া যাবে না। যত বেশি সময় এরা থাকবে, এরা থাকলেই বাংলাদেশকে ধবংস করে ফেলবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশে বিদ্যুত ও জ্বালানির কোনো ঘাটতি নেই’। আমার প্রশ্ন ঘাটতি নেই তো লোড শেডিং কেন, ঘাটতি নেই তো ৮ ঘণ্টা বিদ্যুত নেই কেন? কেন আপনারা জ্বালানি লোড শেডিং রেশন করছেন, গ্যাস রেশন করছেন। কেন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এখন অশনি সংকেত?
সরকার বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সর্বনাশ করে দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, শহরে দুই-তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না, আর গ্রামে ৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। অথচ এই সরকার বিদ্যুতের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে এবং লুট করে বিদেশে পাঠিয়েছে।
সমাবেশে আসা নারী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ছয় মাসের শিশু সুরাইয়া পুলিশের গুলিতে তার মাথার গুলি উড়ে গেছে। পত্রিকায় প্রতিদিন দেখবেন হাজারো মানুষ তারা হয় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে অথবা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে মারা যাচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের শালীনতা হানি করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হত্যা করা হচ্ছে। সমগ্র দেশে আজকে একটা হাহাকার পড়ে গেছে।
সমাবেশে লোড শেডিংয়ের প্রতিবাদ জানাতে নারীকর্মীরা হারিকেন হাতে নিয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মূল মঞ্চেও ঝুলিয়ে রাখা হয় একটি হারিকেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মা-বোনেরা হারিকেন নিয়ে এসেছেন। এই হারিকেনটা গণভবনে শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়ে দেন। তার হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেন। শুধু এই মিটিংয়ের মধ্যে হারিকেন আনলে হবে না। যখনই অন্ধকার আসবে, যখন লোড শেডিং শুরু হবে আপনারা মোমবাতি ও হারিকেন নিয়ে বের হবেন। এই মোমবাতি হারিকেন নিয়ে না বের হলে আমরা আলোচিত হব না।
সমাবেশের শুরুতে দেশ রূপান্তর সম্পাদক অমিত হাবিবের মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধার নিবেদনের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব।
উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, তাবিথ আউয়াল, সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক মোস্তা্ফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্র দলের সাইফ মাহুমদ জুয়েল প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।