রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ!
মুন্সিগঞ্জে মিথ্যে মামলায় জেলের ঘানি টানছে নাবালক কিশোর ও তার বাবা

মুন্সিগঞ্জে মিথ্যে মামলায় জেলের ঘানি টানছে নাবালক কিশোর ও তার বাবা

গত এক বছর ধরে প্রতিপক্ষের মিথ্যে মামলায় জেলের ঘানি টানছে এক নাবালক কিশোর মহিউদ্দিন। কিশোরের সাথে জেলে দিন কাটা”েছন কিশোরের বাবা হাজী শাহাদাৎ বেপারী নিজেও।
মুন্সিগঞ্জের সদর জেলে অব¯’ান করা পিতা-পুত্রের এই জেলজীবন খুবই মর্মান্তিক। বিশেষ করে নাবালক কিশোরকে যখন জেলের ঘানি টানতে হয় তখন আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ^াস কোথায় যায়! তা ভেবে দেখার বিষয়। যে বয়সে একটি কিশোর দুরন্তপণায় ছুটে বেড়ায় কিংবা স্কুল-মাদ্রাসার ক্লাসে শিক্ষকের ¯েœহ-আদরে পড়াশুনা করার কথা, সে বয়সে একটি ছেলে এক বছর ধরে জেলের ঘানি টানছে! প্রশ্ন জাগে না বিবেকের কাছে?
অনুসন্ধানে যতদূর জানা যায়, প্রতিপক্ষের উৎকোচে প্রভাবিত হয়ে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে এই পিতা-পুত্রকে। এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ এসপি অফিসে যোগাযোগ করা হলে মুন্সিগঞ্জ জেলার এসপি জেলার পুলিশ সার্কেল অফিসারকে (এএসপিকে) বিষয়টি খতিয়ে দেখে, ব্যব¯’া দেওয়ার নির্দেশ দিলেও এএসপি যথাযথ ভ‚মিকা রাখেনি।
ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে আমাদের একটু পিছন ফিরে তাকাতে হবে। মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার ‘শিলই ইউনিয়ন পরিষদ’ এলাকার বাসিন্দা হাজী শাহাদাৎ বেপারী, পিতা- হাজী শামসুজ্জামান বেপারী, গ্রাম- রাকিরকান্দিÑ তিনি এলাকায় একজন সজ্জন ও পরোপকারী মানুষ হিসেবে পরিচিত। মানুষের বিপদে-আপদে তিনি সকল মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। সেই সূত্র ধরে একদিন হাজী শাহাদাৎ বেপারী এলাকার কিছু সাধারণ ও প্রান্তিক চাষির দাবিকে সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি ছিলÑ ‘পূর্ব রাকিরকান্দি গ্রামের দক্ষিণ দিকের পদ্মার একটি শাখা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ বা প্রতিকার চেয়ে’। কারণ হিসেবে আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ড্রেজার এবং ভেকুর মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনে চাষিদের ভিটেবাড়ি এবং ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যা”েছ; জেলা প্রশাসক যেনো একটি প্রতিকার করেন। আবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত পঁয়ত্রিশ জন চাষির সহি-স্বাক্ষরও দেওয়া ছিল। কিš‘ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের আপত্তি জানানোর ফলে, বালু উত্তোলনে জড়িত একই গ্রামবাসী এবং প্রতিবেশী ১। ইসমাইল, পিতা-মৃত হাজী আবদুল হাই বেপারী ২। জাকির, ৩। মিজানুরের সাথে শাহাদাৎ বেপারীর সাথে সম্পর্কের শীতলতা তৈরি হয়। পূর্ব থেকেই শাহাদাৎ এবং ইসমাইলের সম্পর্ক খুব ভালো ছিলোনা। তাছাড়া, অবৈধ বালুর বন্ধ হলে পুলিশের একশ্রেণির সদস্যদের অবৈধ চাঁদার ভাগ কমে যাবে। এসব নানা কারণে পুলিশের দু’এক জন অতি উৎসাহী সদস্য ইসমাইল পক্ষকে ক্ষেপিয়ে তোলে। তারই রেশ ধরে একদিন ইসমাইল, নুরুল ইসলাম মাদবরসহ ১০/১২ জন লোক হাজী শাহাদাৎ বেপারীকে দেশীয় অস্ত্রদিয়ে প্রচুর মারধর করে অর্ধমৃত অব¯’ায় রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। বিষয়টি নিয়ে শাহাদাৎ বেপারী টংগীবাড়ি থানায় একটা মামলা দায়ের করেন নং- ০২, তারিখ: ০৩-০২-২০২৩ ধারাÑ ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪/৫০৬/৩৪ । মামলার কথাটি ঐ সময় বিভিন্ন পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়। এদিকে ইসমাইলের এক শ্যালক শ্যামল বেপারী বিদেশ থেকে এসে এলাকায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে এবং এলাকার উ”ছৃঙ্খল ছেলেপেলেদের সাথে একটি মাদক ব্যবসায় গ্রæপ তৈরি করেÑ শ্যামলের এই মাদক ব্যবসা, বখে যাওয়ার বিষয়টি তার পরিবার, আপন ভাই, পরিজন মেনে নিয়ে পারেনি। যা নিয়ে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন আর ভাইদের সাথে শ্যামলের প্রায়ই দ্ব›দ্ব লেগে থাকত। পরিবারের এই দ্ব›দ্ব, মাদক ব্যবস্যা, এলাকায় উ”ছৃঙ্খলতা, নানা কারণে শ্যামলের মাদক ব্যবসার গ্রæপটি, দল-উপদলে ভাগ হতে থাকে। অনুসন্ধানে যতটুকু জানা যায়, শ্যামলের সাথে তারই মাদক ব্যবসার অংশীদারদের দ্ব›েদ্বর কারণে হঠাৎ একদিন শ্যামল খুন হয়ে যায়। শ্যামলে খুন হওয়ার বিষয়টিকেই পূর্ব শত্রæতা, এবং মামলার জের হিসেবে কাজে লাগায় শাহাদৎ বেপারীর বিরুদ্ধ পক্ষ ইসমাইল গংরা। তারা শ্যামলের পরিবারকে বুঝিয়ে সুজিয়ে খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় শাহাদাৎ বেপারীকে। একইসাথে শাহাদাৎ বেপারীকে ফাঁসাতে গিয়ে ইসমাইল গংরা শাহাদাৎ বেপারীর সুনাম ও প্রতিপত্তিকে বিলীন করতে, গ্রামের ভিটে মাটি-ছাড়া করতে শাহাদাৎ বেপারীর মাসুম নাবালক ছেলেকে মামলায় জড়িয়ে দেয়। খুনের মামলায় আরো ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জনকে আসামী করা হয়। মামলা নং মুন্সিগঞ্জ সদর থানা, মামলা নম্বল- ২৮ তারিখ: ১৫/০৬/২০২৩। এই হত্যা মামলায় দায়েরের পর পুলিশ শাহাদাৎ বেপারীকে জেলে ঢুকায়, একইসাথে শাহাদাৎ বেপারীর নিষ্পাপ, নাবালক ছেলেকে বেশি বয়স দেখিয়ে, আইনের অপব্যাখ্যা করে মামলার অংশ করে জেলে পাঠিয়ে দেয়। মামলায় জড়িয়ে দেয়ার পর শাহাদাৎ বেপারীর স্ত্রী ও পরিজন দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়া”েছ। বিষয়টি নিয়ে শাহাদাৎ বেপারীর স্ত্রী শাহানাজের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি তাঁর নাবালক ছেলের মুক্তি চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি আইনের কাছে নিরাপরাধ ছেলেটির সুবিচার প্রার্থনা করেন। পুরো ঘটনার বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় শাহানাজ জানান, শাহাদাৎ বেপারীকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়ে, ইসমাইল গংরা শাহাদাৎ বেপারীর বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে বাড়ির সকল আসবারপত্র, ঘরের দরজা-জানালা খুলে নিয়ে বিক্রি করে দি”েছ একইসাথে শাহাদাৎ বেপারীর জমি-জমা ভুয়া দলিল করে বিভিন্ন হাউজিং কম্পানির কাছে বিক্রি করে দি”েছ। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই তাদের পথে বসতে হবে। শাহানাজ বেপারী আইনের কাছে, আইনের রক্ষাকারীদের কাছে, সৎ অফিসারদের কাছে তাদের হয়রানির সুবিচার চান। তাকে বাড়িঘরে ফেরার সুযোগ করে দিতে এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে আইনের কাছে প্রার্থনা করেছেন।
পত্রিকার পরবর্তী সংখ্যায় হাজী শাহাদাৎ বেপারীর বাড়িতে ইসমাইল গংদের লুটপাটের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হবে…

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com