রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন
সরকার জামাল: উত্তরার বেড়িবাধ সংলগ্ন এলাকায় নিরক্ষর মটর মেকানিক জহিরের ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হচ্ছে এলাকাবাসী। জহির সোসাল মিডিয়া ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিব্রত করছে সবাইকে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাষন ও সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে জানাযায়, জহিরের কান্না-কাটি করা আবেগী কথা-বার্তায় অনেকসময় যে-কোন সচেতন লোকও বিভ্রান্ত হয়ে যায়। জহির সম্প্রতি কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সোসাল মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তমূলক প্রতিবেদন করান, যা নিয়ে সচেতন মহল বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহল বেশ চিন্তিত, কারণ এসব সংবাদের কারণে বেশকিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মানহানী ও এলাকাবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়। জহির তার সাথে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে স্থানীয় আব্দুর রব মিয়াকে জড়িয়ে বিভ্রান্ত ছরাচ্ছে।
স্থানীয়রা ঐসব তথ্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, অন্যের প্ররোচনা বা প্রাপ্ত সংবাদের তথ্য যাচাইবাছাই করে প্রকৃত ঘটনাটি বন্তনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করার জন্য।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, রব সাহেবের জনপ্রিয়তা দেখে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। স্থানীয় একটি কুচক্রি মহল সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপকৌশলের অংশ হিসেবে জহিরকে দিয়ে রব মিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গুজব রটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
ওই মহলটি ষড়যন্ত্র করে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের মিথ্যে তথ্য দিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে মেকানিক জহিরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মা মারা যান। তখন আমার বয়স ছিলো ৮ বছর। মা মারা যাওয়ার ৪ মাস পরে বাবা পুনরায় বিবাহ করেন। তার ২ মাস পরে তিনি আমাদের বাড়াটি বিক্রয় করে দিয়ে সৎ মায়ের বাড়ীতে চলে যান এবং ওখানে নতুন বাড়ী কিনেন। এরপর থেকে আমার আর কোনো খোঁজ-খবর নেন না। আমাকে পৈত্রীক কোনো সম্পত্তি দেওয়া হয় নাই। আমরা ৩ ভাই ও ২ বোন এখন কি করবো? কোথায় যাবো? কার কাছে যাবো? কোনো উপায় না পেয়ে নিরুপায় হয়ে আমি ভ্যান গাড়ি চালানোর কাজ শুরু করলাম। এত অল্প বয়সে এ কাজ করে আমি আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পরলাম। অসুস্থতার কারনে আর ভ্যানগাড়ি চালাতে পারিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছুদিন পর আমি একটা হোটেলে কাজ নিলাম। এ সময় আমি মানুষের কাছে নিজের পরিচয় দিতে না পারায়, লোকজন নানা ধরনের কটু কথা বলতো। আর এসব কথা শুনতে না-পেরে আমি কোনো একটা রাতে অসহায়ের মত অচেনা শহর ঢাকাতে পারি জমাই। না-খেয়ে না-ঘুমিয়ে অবশেষে একটা কাজ পাই মিরপুরে একটি মিষ্টির দোকানে। লোকেরা বলতে থাকে তুমি এখনো অনেক ছোট, তুমি এ কাজ করতে পারবে না। পরে যোগাযোগ করে কোনো রকমে আমার ভাইয়ের খোজ পেলাম এবং তার সাথে যোগাযোগ করলাম। তিনি আমাকে তার কাছে চলে যেতে বলেন। তখন আমি তার কাছে টঙ্গী চলে গেলাম। আমার বড় ভাই আমাকে তখন কলম ফেক্টরীতে চাকরী নিয়ে দেয়। কিছুদিন পরে চাকরীতে কষ্ট সহ্য করতে না-পারায়, ছোট হওয়ায় আমাকে সেখানে আর কাজ করতে দেয়নি তারা। তার কিছুদিন পর আমার এক লোকের সাথে পরিচয় হয়, তিনি একজন মোটর গ্যারেজের ম্যানেজার। তিনি আমাকে বললেন তুমি কি আর করবে? আমার গ্যারেজে গাড়ির কাজ শিখ। আমি তার কথাতে গাড়ির কাজ শিখতে রাজি হয়ে গেলাম। প্রায় ৩ বছর কাজ শিখার পর আমি মোটামুটি মিস্ত্রী হয়ে যাই। মিস্ত্রি হওয়ার পর চাকরী করতে থাকি। কিন্তু বিভিন্ন প্রতারণা আর টানাপোড়নের ঘটনায় আজ আমি নিঃস্ব, হতাশ। আমি বাঁচবো না-কি মরে যাবো তাও জানি না। আমার জীবনের কোন মায়া নাই। আমি দুনিয়ার কাওকে পরোয়া করি না। এই দুনিয়ার আইন বিচার সব মিথ্যা।