শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম:
টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় দুই আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জেবি এম হাসান ও বিচারপতি মো. তৌফিক ইনামের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট তিভিশন বেঞ্চ সোমবার এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত দুই আসামি হলেন-হেলপার শামীম ও জাহাঙ্গীর। এদের এক লাখ টাকা জরিমানাও করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে সাত বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বাসের চালক হাবিবকে। সেই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বাসের হেলপার আকরাম জেলখানায় মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম মাসুদ রানা, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মীর মনিরুজ্জামান ও আয়েশা আক্তার, তারেক রহমান। আসামীপক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ ও মো. দেলোয়ার হোসেন।
রায়ের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ রানা বলেন, ‘রূপা হত্যার ঘটনাটি বহুল আলোচিত। আদালত বলেছেন অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডই প্রাপ্য ছিল। কিন্তু আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবনের কথা বলা আছে। হাইকোর্ট দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে বিস্তারিত জানা যাবে। আর অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে পরামর্শ করে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, হাইকোর্ট বাস মালিকের আবেদন নিষ্পত্তি করে জব্দকৃত বাসটি মালিকের জিম্মায় দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ১৫ দিনের মধ্যে মধুপুর থানার ওসিকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ছোঁয়া পরিবহনের বাসে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন রূপা। এসময় তাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যা করে বাস শ্রমিকরা। পরে মরদেহ মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় ফেলে দেয়া হয়। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে গ্রেফতার বাসটির হেলপার শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের রায়ে সুপারভাইজার সফর আলীকে সাত বছর এবং বাকি চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের তৎকালীন অতিরিক্ত এক নম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালত। বিচারিক আদালতের ওই রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। সেই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে সোমবার রায় দেন হাইকোর্ট।