বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন
সৈয়দ মোঃ কায়সার আশ্রাফী, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে। ১৯ জানুয়ারি সার্কিট হাউসে তিন উপদেষ্টার উপস্থিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন খালের মুখ পরিষ্কার এবং বর্জ্য অপসারণ শুরু করেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব বহর ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেওয়া ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে নিজস্ব অর্থায়নে কাজগুলো সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী বর্ষায় নগরবাসী এর সুফল পাবে। তবে পুরোপুরি সুফল পেতে নগরীর খালগুলোর অভ্যন্তরে পরিষ্কারের পাশাপাশি নগরবাসীর সচেতনতা প্রয়োজন। ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নির্ধারণে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের উপস্থিতিতে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উক্ত সিদ্ধান্তসমূহের আলোকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন কর্ণফুলী নদী সংলগ্ন বিভিন্ন খালের অংশে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি ও বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশেষ করে রাজাখালী খাল, চাক্তাই খালসহ চট্টগ্রাম শহর থেকে কর্ণফুলী নদীর সাথে যুক্ত হওয়া বিভিন্ন খাল ও নালার মুখে ভেসে আসা প্লাস্টিক ও অপচনশীল বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ খালের পানি প্রবাহ ঠিক রাখার কার্যক্রম শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষ দীঘদিন ধরে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগ এবং অর্থায়নে কর্ণফুলী নদীর মূল চ্যানেলে ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি বন্দরের আওতাধীন খালসমূহের বর্জ্য অপসারণ করে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ওই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৫৫ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী জুনে প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে।
বন্দর সূত্র জানায়, ক্যাপিটাল ড্রেজিয়ের মতো প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পরও নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে কিছুটা স্বস্তি দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। জলাবদ্ধতার মূল সমস্যা খালের ভিতরে নিহিত, যা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এখতিয়ার বহির্ভূত। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খালসমূহকে নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে বন্দর কর্তৃপক্ষের গৃহীত এ সকল কার্যক্রমের সম্পূর্ণ সুফল নগরবাসী পাবেন না। বন্দর কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া দুটি কাটার সাকশান ড্রেজারের পাশাপাশি নিজস্ব বহরের একটি এম্পিবিয়াস ড্রেজার এবং একটি বর্জ্য অপসারণকারী জাহাজ বে ক্লিনার–১ কে প্রকল্প এলাকায় মোতায়েন করেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই খালের মুখে পানি প্রবাহ বৃদ্ধির কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া নদী, নালা, খাল ও ড্রেনে বর্জ্য না ফেলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।