লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে অন্যান্য ফসলের চেয়েও বেশ লাভবান হওয়ায় দিনের পর দিন বাড়ছে কলা চাষীদের সংখ্যা।
লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন, ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভায় মালভোগ, চিনিচম্পা, মেহের, সাগর, রঙ্গিনসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের কলার চাষাবাদ করা হয় উল্লেখ্যযোগ্য এলাকা গুলোতে।
লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষযোগ্য জমির পাশাপাশি পতিত জমিতে করা হয়েছে অসংখ্য কলার বাগান। আর কলা চাষে সফলতার মুখ দেখেছেন চাষীরাও। ফলে অন্যের জমি বর্গা নিয়েও অনেকে কলা বাগান করেছেন। আবার অনেকে পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশের পতিত জমিতেও কলার বাগান করেছেন।
যেখানে অন্যান্য ফসল করে লাভবান হতে পারছে না স্থানীয় চাষীরা, সেখানে কলা চাষে সফল হচ্ছেন। ফলে দিন দিন বাড়ছে কলার বাগানের সংখ্যা। এতে সম্পৃক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন চাষী। একরের পর একর কলার বাগান করে বছর শেষে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করতে পারায় স্থানীয় অনেক যুবকেরা পেশাও বদলাচ্ছেন। অন্য পেশা ছেড়ে আসছেন কলা চাষে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তৃত জমিতে কলার বাগান। পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগানের মালিক-কর্মচারীরা। এ উপজেলার পতিত জমির বেশির ভাগেই বালু মাটির আস্তরণ। অন্যান্য ফসল যেখানে তেমন ভালো হচ্ছে না, সেখানে কলা বাগান করে আর্থিক স্বচ্ছলতা এনেছেন অনেকেই।
সুধীর চন্দ্র রায়, আতিকুল ইসলাম, আবুল হোসেনসহ কয়েকজন কলা চাষী জানান, অন্যান্য ফসল উৎপাদনের চেয়ে কলা চাষে খরচ কম, লাভও বেশি। এ এলাকার যেসব জমিতে আগে ধান চাষ হতো, এখন সেখানে করা হচ্ছে কলা বাগান।
তারা জানান, গত মৌসুমে কলা বিক্রি করে অনেক টাকা লাভ হয়েছিল।
মুদির দোকানদার মোঃ ইসরাইল হোসেন বলেন, আমি পাকা কলা এক হালা (৪টি) খুচরা বিক্রয় করি ২০টাকা হতে ৬০টাকা দরে। কলা চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে।
ফুলগাছ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব বলেন, আমরা কলা চাষীদের নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে থাকি। এতে করে তারা কলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন বলেন, কলা বর্ষজীবী উদ্ভিদ। কলা চাষে খরচ কম, ঝুঁকি ও রোগবালাই কম থাকায় লালমনিরহাটে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কলা চাষ। একবার কলা চারা রোপণ করলে তা কয়েক বছর পর্যন্ত জমিতে রাখা যায়। সেই সাথে আবাদে পর্যাপ্ত লাভের কারণে জেলার চর আঞ্চলের জমিগুলোতে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে।