বরিশাল-৫ (সদর) আসনটি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক উত্তাপ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এই আসনটি স্থানীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্ব বহন করে আসছে। প্রতিটি নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের লড়াইয়ের কারণে বরিশাল-৫ সবসময়ই আলোচনায় থাকে—এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি শেষ পর্যন্ত এই আসনে আস্থা রেখেছে দলের অভিজ্ঞ রাজনীতিক মজিবর রহমান সরোয়ারের ওপর। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, দলের স্থায়ী কমিটির ঘনিষ্ঠ সহযোগী, এবং বরিশাল-৫ আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য। সরোয়ার একসময় জাতীয় সংসদের হুইপ এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং দীর্ঘদিনের মাঠ পর্যায়ের যোগাযোগের কারণে বরিশালে সরোয়ারের একটি শক্ত ভোটব্যাংক রয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, বরিশাল বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্জাগরণ ও আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর অবদানও অন্যতম।
দলীয় সূত্র জানায়, স্থানীয়ভাবে বিভাজন সৃষ্টি না করে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার লক্ষ্যে বর্ষীয়ান নেতা সরোয়ারকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরের শুরুতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মনোনয়ন চূড়ান্তের পর থেকেই মজিবর রহমান সরোয়ার মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক, নির্বাচনী কমিটি গঠন, ওয়ার্ডভিত্তিক সমন্বয় সভা—সবকিছুতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি বরিশাল অঞ্চলে একাধিক আসনে “কেন্দ্রীয় তত্ত্বাবধান”ের কৌশল নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সরোয়ারের প্রচারণা পরিচালনায় ঢাকার কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বরিশাল-৫ আসনটি ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে পালাবদলের ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে জয় পান মজিবর রহমান সরোয়ার। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করলেও সরোয়ারের জনপ্রিয়তা তখনও বজায় ছিল বলে স্থানীয় বিশ্লেষকদের মত।
এবারের নির্বাচনে সরোয়ারের প্রার্থিতা বরিশাল বিএনপিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে। তবে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যেও মনোনয়ন দৌড় চলছে, যা আসন্ন নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনকে আবারও জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে পারে।
