ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের ভূমি আপিল বোর্ডে মামলায় পরাজিত হওয়ার পরও নরসিংদী সদর উপজেলার বিলাসাদী মৌজার আর এস ৩৬৩- নং দাগে- দাগের অতিরিক্ত নামজারী করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল এ শাখা থেকে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা চলছে-এমন অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভূমির মালিক প্রফেসরস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট-এর সভাপতি অধ্যাপক আলহাজ্ব কামাল আহম্মেদ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। ১৩ শতাংশের দাগে দুটি পূর্বের নামজারী।
গণমাধ্যমকে কামাল আহম্মেদ জানান, আর এস দাগ নং ৩৬৩–এ মোট জমি ১৩ শতাংশ। এর মধ্যে ৪ শতাংশ জমি তার মালিকানাধীন প্রফেসরস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর নামে ১০ এপ্রিল ২০১১ সালে নামজারী (জমাভাগ মামলা নং ৮৫৩৫/১০–১১), এবং ৮.৫০ শতাংশ জমি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া ও মাহবুবা বেগমের নামে ৬ জুন ২০০৭ সালে নামজারী (মামলা নং ৬৪৯১/০৬–০৭) লিপিবদ্ধ রয়েছে।
দুটি নামজারী মিলিয়ে দাগের পুরো ষোল আনা মালিকানা স্থির থাকে। আপিল বোর্ডে মালিকানা দাবিতে হেরে যান মো. হানিফা এরপর মো. হানিফা দাগের মালিকানা দাবি করে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে আপিল দায়ের করেন। ওই মামলায় পরাজিত হলে তিনি আবারও ভূমি আপিল বোর্ড, ঢাকা বিভাগ-এ রিভিশন মামলা (নং ৩.৪৩/২০১৮ দায়ের করেন। ১২ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে ভূমি আপিল বোর্ডের বিচারক মো. সাবিরুল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন। সেখানে হানিফার মালিকানা বা দখলের প্রমাণ না থাকায় আপিলটি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হয়। এ ছাড়া নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে আর এস ৩৬৩ নং দাগে আরও দুটি নামজারী আপিল (মো.নং ৪৩১/২০২১ ও ৪৩২/২০২১) বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
অভিযোগ: আপিল বোর্ডের রায় অমান্য করে নতুন নামজারী অধ্যাপক কামাল আহম্মেদের অভিযোগ, আপিল বোর্ডের রায়ে দাগের ষোল আনা মালিকানা বহাল থাকা সত্ত্বেও ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি মো. হানিফা-র নামে নামজারী (মামলা নং ৫০০৯/২১–২২) এবং ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ মো. রাশেদ রানা-র নামে নামজারী (মামলা নং ১৩৭৪১/২৩–২৪) সম্পন্ন করা হয়। তার দাবি-এই দুই ব্যক্তি দাগে কোনো দখল না থাকলেও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বেআইনিভাবে অতিরিক্ত নামজারী করেছেন, যা মূলত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নেওয়া এলএ মামলা নং ০১/২০–২১, বিবিধ মামলা নং ৫৯/২১-এ নির্ধারিত ৫ শতাংশ অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। আমরাই মালিক, তবুও টাকা তুলতে পারছি না। কামাল আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন,আমাদের জমি অধিগ্রহণ হলেও, ভূমি আপিল বোর্ডের রায় আমাদের পক্ষে থাকার পরও আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করতে পারছি না। কিন্তু দখলহীন দুটি অতিরিক্ত নামজারীর ভিত্তিতে কিছু ব্যক্তি টাকা নিতে চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর মো. হানিফা এবং মো. রাশেদ রানা তাদের দল নিয়ে হামলা চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকরা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতের বিচারক মাহমুদা বেগম মন্তব্য করতে রাজি না হলেও। জেলা প্রশাসক মোহামামদ. আনোয়ার হোসাইন বলেন: অভিযোগটির প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগকারী অধ্যাপক কামাল আহম্মেদের প্রশাসনের নিকট দাবী দাগের বেআইনি অতিরিক্ত নামজারী বাতিল, স্বচ্ছ তদন্ত এবং প্রকৃত মালিকদের অধিগ্রহণের টাকা প্রদানের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।